পবিত্র আশুরা আজ: শোক, ত্যাগ আর ন্যায়ের পথের অনন্য স্মারক
প্রকাশিত: জুলাই ০৬, ২০২৫, ১২:২৩ রাত

ফাইল ছবি
আজ ১০ মহররম, পবিত্র আশুরা। ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের কাছে দিনটি গভীর শোকের ও তাৎপর্যময় স্মৃতির। ৬১ হিজরির এই দিনে কারবালার প্রান্তরে শাহাদতবরণ করেন মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রিয় দৌহিত্র ইমাম হোসেন (রা.)। তিনি ছিলেন হজরত আলী (রা.) এবং হজরত ফাতেমা (রা.)-এর পুত্র।
হজরত আলীর (রা.) মৃত্যুর পর খলিফা হন হজরত মুয়াবিয়া (রা.)। জীবদ্দশাতেই তিনি নিজের পুত্র ইয়াজিদকে উত্তরাধিকারী হিসেবে মনোনীত করেন। তবে ইয়াজিদের কাছে আনুগত্যের অঙ্গীকার (বায়াত) নিতে রাজি হননি ইমাম হোসেন (রা.)। তিনি অবিচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে মদিনা ত্যাগ করে কুফার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন। পথিমধ্যে কারবালার প্রান্তরে তাঁর কাফেলা যাত্রাবিরতি করে।
ইয়াজিদের নির্দেশে উমর ইবনে সাদ বিন আবি ওক্কাসের নেতৃত্বে চার হাজার সৈন্য কারবালায় এসে ইমাম হোসেন (রা.) ও তাঁর সঙ্গীদের ঘিরে ফেলে। তাঁদের আত্মসমর্পণে বাধ্য করতে শিবিরের পানির সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়। নারী-শিশু সবাই তৃষ্ণায় কাতর হলেও ইমাম হোসেন (রা.) অন্যায় শাসকের কাছে মাথানত করতে রাজি হননি। অবশেষে ১০ মহররম, আশুরার দিনে অবরোধের বিরুদ্ধে অসম এক যুদ্ধে ইমাম হোসেন (রা.) এবং তাঁর ৭২ জন সঙ্গী শাহাদতবরণ করেন। শিমার ইবনে জিলজুশান তাঁর কণ্ঠদেশে ছুরি চালিয়ে তাঁকে শহীদ করে।
মুসলিম সমাজে আশুরার গুরুত্ব শুধু কারবালার শোকেই সীমাবদ্ধ নয়। ইসলামি বিশ্বাস অনুযায়ী, এই দিনেই কেয়ামত সংঘটিত হবে। হাদিসে বর্ণিত আছে, মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) এ দিনে রোজা রাখতেন।
শিয়া মুসলমানদের কাছে আশুরা বিশেষভাবে শোকের দিন। এদিন তাঁরা মাতম ও শোকানুষ্ঠান পালন করেন। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে তাজিয়া মিছিল, শোকসভা ও দোয়ার মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।
পবিত্র আশুরা উপলক্ষে এক বাণীতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “পবিত্র আশুরা জুলুম ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে সত্য এবং ন্যায়ের পতাকা উড্ডীন রাখার শক্তি ও প্রেরণা জোগায়। এ দিন সমাজে সাম্য, ন্যায় ও শান্তি প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি মুসলিম উম্মাহর ঐক্য, সংহতি ও অগ্রগতির জন্য আমাদের সকলকে একত্রিত হতে শেখায়।”
কারবালার মর্মান্তিক ঘটনার স্মরণে আজও বিশ্বমুসলিমের হৃদয়ে আশুরা অম্লান হয়ে আছে। এই দিনই বারবার মনে করিয়ে দেয়- ন্যায়ের জন্য আত্মত্যাগ কখনো বৃথা যায় না।
বাংলাধারা/এসআর