ঢাকা, সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫, ২৩ আষাঢ় ১৪৩২

সরকার কঠোর অবস্থানে, চাপে ও আতঙ্কে এনবিআর কর্মকর্তারা

নিজস্ব প্রতিবেদক

 প্রকাশিত: জুলাই ০৪, ২০২৫, ০৪:২০ দুপুর  

ছবি: সংগৃহিত

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) পুনর্গঠন ও বিভাজন নিয়ে চলমান অস্থিরতার পর আন্দোলনে নামা কর্মকর্তাদের ওপর শাস্তিমূলক পদক্ষেপ আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে। আন্দোলন প্রত্যাহারের এক সপ্তাহ না পেরোতেই পাঁচ সিনিয়র কর্মকর্তাকে বরখাস্ত ও বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ইতোমধ্যেই বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তদন্ত শুরু করেছে। সরকারের কঠোর অবস্থানে রাজস্ব প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

অফিস সূত্র জানায়, আন্দোলনে যুক্ত ছিলেন এমন অনেক কর্মকর্তা নিজেদের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দিয়েছেন। পাশাপাশি, অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকেও অনেকেই নিজেদের গুটিয়ে নিচ্ছেন।

এনবিআর সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে, অন্তত আরও ছয়জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। এসব পদক্ষেপের মধ্যে সাময়িক বরখাস্ত, বদলি কিংবা বাধ্যতামূলক অবসর অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।

দুদক সূত্র জানায়, গত দুই দিনে ১১ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে অনুসন্ধান শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে এনবিআরের চারজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠিয়েছে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি)। এ-সংক্রান্ত দুটি পৃথক প্রজ্ঞাপনও জারি হয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবারও এনবিআরের দুই কমিশনারসহ আরও পাঁচজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন। দুদক থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, তদন্তের আওতায় আসা কর্মকর্তারা হলেন-

  • মো. কামারুজ্জামান, কমিশনার, বেনাপোল কাস্টমস হাউস
  • কাজী মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, কমিশনার, ঢাকা পূর্ব কাস্টমস, এক্সাইজ অ্যান্ড ভ্যাট কমিশনারেট
  • সেহেলা সিদ্দিকা, অতিরিক্ত কর কমিশনার, আয়কর বিভাগ
  • মো. মামুন মিয়া, উপ-কর কমিশনার
  • লোকমান আহমেদ, কর পরিদর্শক

এনবিআর সূত্র আরও জানিয়েছে, বিভিন্ন পর্যায়ের আরও কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর তালিকা তৈরি হচ্ছে। একই সঙ্গে, আন্দোলনে যুক্ত ছিলেন এমন অনেক কর্মকর্তার বদলির বিষয়েও উচ্চপর্যায়ে আলোচনা চলছে।

সরকারি মহলে আভাস, এনবিআর পুনর্গঠনকে ঘিরে প্রশাসনিক স্থিতি ফিরিয়ে আনতে সরকার এ অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। তবে এই কঠোর পদক্ষেপ রাজস্ব প্রশাসনে চরম অনিশ্চয়তা ও ভীতি তৈরি করেছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

 

বাংলাধারা/এসআর