ঢাকা, রবিবার, ০৩ আগস্ট ২০২৫, ১৯ শ্রাবণ ১৪৩২

শেখ হাসিনার সর্বোচ্চ শাস্তি চায় রাষ্ট্রপক্ষ: অ্যাটর্নি জেনারেল

নিজস্ব প্রতিবেদক

 প্রকাশিত: আগস্ট ০৩, ২০২৫, ০২:১৪ দুপুর  

ছবি: সংগৃহিত

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সর্বোচ্চ শাস্তি চেয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ। 

রোববার (৩ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১–এ শুনানির পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা জানান অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।

তিনি বলেন, “আমরা আইনের কাঠামোর মধ্যেই ন্যায়বিচার চাই। প্রসিকিউশনের উপস্থাপিত উপাদান বিশ্লেষণ করে এবং সাক্ষ্য শুনে এমন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই, যা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য বার্তা বহন করবে।”

অ্যাটর্নি জেনারেল অভিযোগ করেন, বিগত আমলে গুম-খুনের একটি রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে উঠেছিল। সেই সংস্কৃতি থেকে মুক্ত হয়ে দেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করাই রাষ্ট্রপক্ষের লক্ষ্য।

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার। পরে এই ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে প্রথম মামলা (মিস কেস) দায়ের করা হয়। ‘সুপিরিয়র কমান্ড রেসপন্সিবিলিটি’ ভিত্তিক মামলায় শেখ হাসিনা ছাড়াও আসামি করা হয় তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং পুলিশের সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে। মামুন বর্তমানে রাজসাক্ষী হিসেবে আদালতে সাক্ষ্য দিচ্ছেন।

চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলামের দাখিল করা অভিযোগপত্রে শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে পাঁচটি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। ৮,৭৪৭ পৃষ্ঠার এই অভিযোগপত্রে রয়েছে ৮১ জন সাক্ষীর তালিকা, বিশদ তথ্যসূত্র, জব্দতালিকা ও শহীদদের তালিকা।

গত ১ জুন ট্রাইব্যুনাল অভিযোগ আমলে নেয় এবং ১০ জুলাই আনুষ্ঠানিকভাবে বিচার শুরুর নির্দেশ দেয়। বর্তমানে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামাল পলাতক থাকায় তাদের অনুপস্থিতিতেই বিচার কার্যক্রম এগোচ্ছে। শেখ হাসিনা বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে।

এ মামলার পাশাপাশি শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আরও দুটি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে একটি তার শাসনামলে গুম-খুনের অভিযোগ এবং অপরটি ২০২৩ সালের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে গণহত্যার অভিযোগে দায়ের করা।

অন্তর্বর্তী সরকার ইতোমধ্যে দলীয়ভাবে আওয়ামী লীগের বিচার নিশ্চিত করতে আইন সংশোধন করেছে। নির্বাচনের আগে জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি ও অন্যান্য দল শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের দ্রুত বিচার শেষ করার দাবি জানিয়ে আসছে।

ট্রাইব্যুনাল সূত্রে জানা গেছে, জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে সরকারের দমন-পীড়নের ঘটনায় একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছে। এসব মামলার বিচার চলছে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে।

বাংলাধারা/এসআর