এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বদলি শুরু হচ্ছে জুলাই থেকে, অগ্রাধিকার পাবে নারী ও স্বামী-স্ত্রীর কর্মস্থল বিবেচনা
প্রকাশিত: জুন ৩০, ২০২৫, ০৭:৫৫ বিকাল

ছবি: সংগৃহিত
দেশের চার লাখের বেশি বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীর জন্য বদলি প্রক্রিয়া অবশেষে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হতে যাচ্ছে। আগামী জুলাই মাস থেকে স্বয়ংক্রিয় সফটওয়্যারের মাধ্যমে এ বদলি কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। সফটওয়্যার তৈরির কাজ ইতোমধ্যেই শেষ পর্যায়ে রয়েছে বলে জানিয়েছে শিক্ষা অধিদপ্তর।
গত ২৬ জুন, বৃহস্পতিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব ড. খ ম কবিরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত বদলি নীতিমালা প্রকাশ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) সুপারিশপ্রাপ্ত এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কর্মরত রয়েছেন। তাই বদলির প্রক্রিয়াটি স্বচ্ছ, সহজ এবং স্বয়ংক্রিয় করতে নতুন এ নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে।
নীতিমালা অনুযায়ী, স্বয়ংক্রিয় সফটওয়্যার ব্যবহার করে শিক্ষক-কর্মচারীরা অনলাইনে বদলির আবেদন করতে পারবেন। আবেদন করতে হলে চাকরির প্রথম যোগদানের পর অন্তত দুই বছর পূর্ণ হতে হবে। বদলির পর নতুন কর্মস্থলে ন্যূনতম দুই বছর কাজ করার পরই পুনরায় বদলির আবেদন করা যাবে।
একজন শিক্ষক সর্বমোট তিনবার বদলির সুযোগ পাবেন। তবে কোনো এক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে বছরে সর্বোচ্চ দুইজন শিক্ষক বদলি হতে পারবেন। নারীদের ক্ষেত্রে বদলির ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। পাশাপাশি স্বামী বা স্ত্রীর কর্মস্থলকেও গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হবে।
গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বদলি নীতিমালা প্রকাশ করা হয়। সেখানে উল্লেখ ছিল, শুধুমাত্র মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) পারস্পরিক বদলির আবেদন নিষ্পত্তি করতে পারবেন। এ বদলিও স্বয়ংক্রিয় সফটওয়্যারের মাধ্যমে সম্পন্ন হবে বলে জানানো হয়েছিল।
জারি হওয়া নীতিমালায় আরও বলা হয়েছে, এনটিআরসিএ প্রতি বছর ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে অনলাইনে প্রতিষ্ঠানভিত্তিক শূন্যপদের তালিকা প্রকাশ করবে। এরপর মাউশি ওই শূন্যপদগুলোর বিপরীতে বদলির জন্য আবেদন আহ্বান করবে। ১ থেকে ৩০ অক্টোবরের মধ্যে অনলাইনে আবেদন করা যাবে। ৩০ নভেম্বরের মধ্যে বদলির আদেশ জারি করতে হবে এবং ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে নতুন কর্মস্থলে যোগদান সম্পন্ন করতে হবে।
বদলির আবেদন প্রক্রিয়ায় শিক্ষক নিজ জেলার পদ শূন্য থাকলে সেখানেই আবেদন করতে পারবেন। তবে নিজ জেলায় শূন্য পদ না থাকলে, নিজ বিভাগের অন্য কোনো জেলায় বদলির আবেদন করা যাবে।
সম্পূর্ণ বদলির প্রক্রিয়া স্বয়ংক্রিয় সফটওয়্যারের মাধ্যমে পরিচালিত হবে। মাউশি সফটওয়্যারের ডিজাইন ও অনলাইন আবেদন ফরম নির্ধারণ করবে। বদলিকৃত শিক্ষকের ইনডেক্স নথি আগের প্রতিষ্ঠান থেকে নতুন প্রতিষ্ঠানে অনলাইনে স্থানান্তর করা হবে।
পারস্পরিক বদলির ক্ষেত্রেও লিখিত আবেদনের ভিত্তিতে কর্তৃপক্ষ বদলি কার্যক্রম নিষ্পন্ন করতে পারবে। বদলিকৃত শিক্ষকের এমপিও সুবিধা, অন্যান্য আর্থিক সুবিধা এবং জ্যেষ্ঠতার ধারাবাহিকতা আগের মতোই বজায় থাকবে।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (মাধ্যমিক) প্রফেসর ড. খান মঈনুদ্দিন আল মাহমুদ সোহেল জানান, “সরকারি হাইস্কুলের জন্য ডায়নামিক ওয়েবসাইট এবং বেসরকারি শিক্ষকদের বদলির জন্য বিশেষ সফটওয়্যার জুলাই মাসেই চালু হচ্ছে। বেসরকারি শিক্ষক বদলি নীতিমালা অনুযায়ী সেই সফটওয়্যার থেকে তথ্য নিয়ে বদলি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে। তাই শিক্ষকদের সময়োপযোগী তথ্যপ্রযুক্তিগত দক্ষতা অর্জন করা অত্যন্ত জরুরি।”
এ নীতিমালা কার্যকর হলে বদলি প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা, গতি এবং শিক্ষকদের কর্মক্ষেত্রে মানসিক প্রশান্তি বাড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বাংলাধারা/এসআর