এবার অস্ত্র আইনের মামলায় খালাস, বাবরের মুক্তিতে বাধা নেই
প্রকাশিত: জানুয়ারী ১৪, ২০২৫, ১০:৪৭ রাত

দশ ট্রাক অস্ত্র আটকের ঘটনায় অস্ত্র আইনের মামলায় যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ পাঁচজনকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট। বাতিল করা হয়েছে যাবজ্জীবন সাজার রায়।
খালাস পাওয়া অন্য ব্যক্তিরা হলেন- রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, নুরুল আমিন, মহসীন তালুকদার ও এনামুল হক। এ ছাড়া যাবজ্জীবনের পরিবর্তে উলফার সামরিক কমান্ডার পরেশ বড়ুয়াকে ১৪ বছর এবং ১০ বছর করে সাজা দেওয়া হয়েছে আকবর হোসেন, লিয়াকত হোসেন, হাফিজুর রহমান ও শাহাবুদ্দিনকে।
রায়ের পর আইনজীবী শিশির মনির সাংবাদিকদের বলেন, ‘এ মামলায় লুৎফুজ্জামান বাবরকে ৭৮ দিন রিমান্ডে নিয়ে চাপ দেওয়া হয়েছিল বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে জড়িয়ে জবানবন্দি দিতে। এই জবানবন্দি দিলে তাকে (বাবরকে) আসামি না করে সাক্ষী করার আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ৭৮ দিন রিমান্ডে থাকার পরও তিনি এই জবানবন্দি দিতে রাজি হননি। যে কারণে তাকে এ মামলায় আসামি করা হয়।’
শিশির মনির বলেন, ‘আদালত আজকেই একটি অ্যাডভান্স আদেশ দেবেন। আশা করছি আজকেই এই আদেশ বাস্তবায়ন হবে এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে তিনি জেল থেকে মুক্তি পাবেন। তিনি কেরানীগঞ্জ কারাগারে আছেন। আদেশ যথাসময়ে পৌঁছার পর তাকে কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হবে।’
যাবজ্জীবন থেকে কমিয়ে যে চারজনকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে, তারা ১০ বছরের বেশি সময় ধরে কারাগারে আছেন। ফলে এই চারজনেরও কারামুক্তিতে বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবী শিশির মনির।
২০০৪ সালের ১ এপ্রিল চট্টগ্রামের সিইউএফএল ঘাট থেকে আটক করা হয় ১০ ট্রাক অস্ত্রের চালান। এ নিয়ে বন্দরনগরীর কর্ণফুলী থানায় অস্ত্র আইন ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে চোরাচালানের অভিযোগ এনে দুটি মামলা করা হয়।
মামলায় ২০১৪ সালের ৩০ জানুয়ারি চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালত এবং বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১ রায় দেন। এর মধ্যে অস্ত্র চোরাচালান মামলায় সাবেক শিল্পমন্ত্রী ও জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামী (অন্য মামলায় ফাঁসি কার্যকর), সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফার সামরিক কমান্ডার পরেশ বড়ুয়া এবং দুটি গোয়েন্দা সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ ১৪ জনকে ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়। অস্ত্র আইনে করা অন্য মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ হয় একই আসামিদের।
বিচারিক আদালতের রায়ের পর ২০১৪ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি রায়সহ মামলার নথিপত্র হাইকোর্টের ডেথ রেফারেন্স শাখায় পৌঁছে, যা ডেথ রেফারেন্স মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়। অন্যদিকে কারাগারে থাকা দণ্ডিত আসামিরা সাজার রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালে হাইকোর্টে পৃথক আপিল করেন।