ঢাকা, বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫, ১৫ শ্রাবণ ১৪৩২

নির্বাচনের আগে মুদ্রানীতিতে চমক নেই: সুদহার-ঋণপ্রবাহ অপরিবর্তিত

নিজস্ব প্রতিবেদক

 প্রকাশিত: জুলাই ২৯, ২০২৫, ০৯:৪১ রাত  

ছবি: সংগৃহিত

নির্বাচনের আগে মুদ্রানীতিতে বড় কোনো পরিবর্তনের বার্তা দিচ্ছে না বাংলাদেশ ব্যাংক। রাজনৈতিক অস্থিরতা, বিনিয়োগে স্থবিরতা, উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও জিডিপি প্রবৃদ্ধির নিম্নহার, এমন নানা চ্যালেঞ্জের মধ্যে ২০২৫–২৬ অর্থবছরের প্রথমার্ধের মুদ্রানীতি (জুলাই–ডিসেম্বর) ঘোষণা করতে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আগামী ৩১ জুলাই (বৃহস্পতিবার) বিকেল ৩টায় বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘মনিটারি পলিসি স্টেটমেন্ট (এমপিএস)’ প্রকাশ করা হবে। অনুষ্ঠানে গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বলে মঙ্গলবার নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানিয়েছেন।

বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতি বছর দুই দফায়, জানুয়ারি-জুন ও জুলাই-ডিসেম্বর, সময়কালের জন্য মুদ্রানীতি প্রণয়ন করে, যেখানে অভ্যন্তরীণ ঋণ, মুদ্রা সরবরাহ ও সম্পদের রূপরেখা নির্ধারণ করা হয়। সংশ্লিষ্টদের মতে, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে এবার ‘নিয়মরক্ষার মুদ্রানীতি’ ঘোষণার প্রস্তুতি চলছে। অর্থাৎ নীতি সুদহার এবং বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহ অপরিবর্তিত রাখা হবে। রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগে অনাগ্রহের কারণে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, জুন শেষে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে মাত্র ৬.৪ শতাংশ, যা গত ২২ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। অথচ লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৯.৮ শতাংশ। এ অবস্থায় ঋণ প্রবাহের বর্তমান ধারা বজায় রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণই এবারের মুদ্রানীতির প্রধান লক্ষ্য। জুন মাসে সামগ্রিক মূল্যস্ফীতি কমে ৮.৪৮ শতাংশে নেমে এসেছে, যা মে মাসে ছিল ৯.০৫ শতাংশ। ব্যাংকের মতে, মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশের নিচে না নামা পর্যন্ত সুদহার কমানোর কোনো সুযোগ নেই।

এদিকে, বিশ্বব্যাংকের ‘গ্লোবাল ইকোনমিক প্রসপেক্টস’ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪–২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমে ৩.৩ শতাংশে নেমে আসতে পারে। তবে ২০২৫–২৬ অর্থবছরে তা বেড়ে ৪.৯ শতাংশ এবং ২০২৬–২৭ অর্থবছরে ৫.৭ শতাংশে উন্নীত হতে পারে।

প্রস্তাবিত ২০২৫–২৬ অর্থবছরের বাজেটের আকার ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ২ লাখ ৫১ হাজার ৬০০ কোটি টাকার বাজেট ঘাটতি রয়েছে, যা মোট জিডিপির ৩.৬ শতাংশ। এই ঘাটতি মেটাতে সরকার অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক ঋণের ওপর নির্ভর করছে। চলতি অর্থবছরে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ১ লাখ ৪ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। সঞ্চয়পত্র থেকে ১২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা সংগ্রহেরও পরিকল্পনা রয়েছে। সদ্য সমাপ্ত ২০২৪–২৫ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে সঞ্চয়পত্র থেকে ১৪ হাজার কোটি এবং ব্যাংক ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৯৯ হাজার কোটি টাকা।

বাংলাধারা/এসআর