বিচার বিভাগীয় সহায়ক কর্মচারীদের কর্মবিরতি: বেতন বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলনের ঘোষণা
প্রকাশিত: মে ১৬, ২০২৫, ০২:৩৬ দুপুর

ছবি: সংগৃহিত
বেতন বৈষম্য ও নিয়োগবিধি সংস্কারের দাবিতে সারাদেশের অধস্তন আদালত ও ট্রাইব্যুনালের সহায়ক কর্মচারীরা দুই দিনের অর্ধদিবস কর্মবিরতির কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। বাংলাদেশ বিচার বিভাগীয় কর্মচারী এসোসিয়েশনের আয়োজনে শুক্রবার পুরান ঢাকার একটি রেস্টুরেন্টে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।
সংগঠনের সভাপতি মো. রেজোয়ান খন্দকার জানান, ২২ ও ২৩ জুন, এই দুই দিন সকাল সাড়ে ৯টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত কর্মচারীরা নিজ নিজ কর্মস্থলে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করবেন। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “দাবি পূরণে যথাযথ পদক্ষেপ না নিলে পরবর্তীতে আরও কঠোর কর্মসূচির পথে যেতে বাধ্য হবো।”
সংগঠনটির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, বিচারকদের জন্য নির্ধারিত বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস পে-স্কেলের আওতায় সহায়ক কর্মচারীদেরও বেতন-ভাতা প্রদান করতে হবে। পাশাপাশি ‘ব্লক পদ’ বিলুপ্ত করে একটি স্বতন্ত্র নিয়োগবিধি প্রণয়ন করার দাবিও জানানো হয়েছে।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কাজী মো. সালাউদ্দিনসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে রেজোয়ান খন্দকার বলেন, ২০০৭ সালের ১ নভেম্বর নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগ পৃথক হলেও এ বিভাগের সহায়ক কর্মচারীদের জন্য কোনো পৃথক বেতন কাঠামো তৈরি হয়নি। বিচারকদের জন্য ৬টি গ্রেডসহ পে-স্কেল চালু হলেও সহায়ক কর্মচারীদের ক্ষেত্রে পুরনো জনপ্রশাসন কাঠামোই বহাল রয়েছে।
তিনি বলেন, “একই দপ্তরে বিচারকদের পাশে থেকে কাজ করা সত্ত্বেও সহায়ক কর্মচারীরা আজও ন্যায্য সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত। বিচারকদের জন্য যে বিচারিক ভাতা, চৌকি ভাতা কিংবা অবকাশকালীন ভাতা রয়েছে, সেই ধরনের কোনো সুবিধা আমাদের দেওয়া হয় না।”
সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এর আগে গত ৫ মে সারাদেশে কর্মচারীরা সকাল সাড়ে ৯টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত কর্মবিরতি পালন করেন। কিন্তু দাবিগুলো নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি পরিলক্ষিত হয়নি।
“আমরা সংলাপ চাই, কিন্তু প্রয়োজনে আন্দোলনও করতে প্রস্তুত। সরকার যদি ন্যায্য দাবি বাস্তবায়নে নিরব থাকে, তাহলে আমাদের পরবর্তী পদক্ষেপ হবে আরও কঠোর,”- বলেন রেজোয়ান খন্দকার।
বিচার বিভাগের কার্যক্রম চালাতে সহায়ক কর্মচারীদের অবদান গুরুত্বপূর্ণ হলেও তারা যদি বছরের পর বছর ধরে বেতন বৈষম্য ও প্রণোদনার অভাবে ক্ষুব্ধ থাকেন, তবে তা বিচার ব্যবস্থার সামগ্রিক গতিশীলতায়ও প্রভাব ফেলবে। এমন বাস্তবতায় সংশ্লিষ্ট মহলের উচিত হবে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া, যাতে সম্মান ও ন্যায্যতার ভিত্তিতে একটি সুষ্ঠু কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা যায়।
বাংলাধারা/এসআর