ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫, ১৬ শ্রাবণ ১৪৩২

ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিতে পশ্চিমা ১৫ দেশের ঐতিহাসিক উদ্যোগ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

 প্রকাশিত: জুলাই ৩০, ২০২৫, ১১:০৬ রাত  

ছবি: সংগৃহিত

ইসরায়েলের দীর্ঘমেয়াদি আগ্রাসনে বিধ্বস্ত ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা আজ পরিণত হয়েছে এক মৃত্যুপুরীতে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর শুরু হওয়া যুদ্ধ এখনও থামেনি। গেল মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত চলমান হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ৩৪ জন ফিলিস্তিনি। প্রতিদিন বাড়ছে এই সংখ্যা, বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল।

অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে যুদ্ধের ফলে দেখা দিয়েছে চরম মানবিক সংকট। খাদ্য, পানি ও চিকিৎসাসেবার অভাবে অনাহারে ও রোগে মারা যাচ্ছেন বহু মানুষ। শিশু থেকে বৃদ্ধ—নির্বিচারে হামলায় ক্ষতবিক্ষত হচ্ছে গোটা জাতি।

এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক মহলে নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে একজোট হয়ে এবার বড় এক পদক্ষেপ নিয়েছে পশ্চিমা বিশ্বের ১৫টি দেশ। নিউইয়র্কে এক গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক সম্মেলন শেষে তারা একযোগে ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।

মঙ্গলবার রাতে নিউইয়র্কে আয়োজিত এই সম্মেলনের উদ্যোক্তা ছিল ফ্রান্স ও সৌদি আরব। লক্ষ্য ছিল, দশকব্যাপী ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধানে দ্বি-রাষ্ট্রভিত্তিক পথ উন্মোচন করা।

সম্মেলন শেষে ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যঁ-নোয়েল ব্যারো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম 'এক্স'–এ দেওয়া এক বিবৃতিতে বলেন, “ফ্রান্স ও আরও ১৪টি দেশ নিউইয়র্ক সম্মেলন থেকে একসঙ্গে একটি স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে, আমরা ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিতে প্রস্তুত। যারা এখনো দেয়নি, তাদেরও একই পথে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাই।”

যৌথ বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারী দেশগুলো হলো:
অ্যান্ডোরা, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স, আইসল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড, লুক্সেমবার্গ, মাল্টা, নিউজিল্যান্ড, নরওয়ে, পর্তুগাল, সান মারিনো, স্লোভেনিয়া এবং স্পেন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ঘোষণা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে একটি জোরালো বার্তা পাঠিয়েছে—ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের দাবি আর উপেক্ষিত থাকতে পারে না। এটি শুধু একটি কূটনৈতিক অবস্থান নয়, বরং এক গভীর মানবিক দায়বদ্ধতার প্রকাশ।

বিশ্ববাসীর চোখ এখন এই ১৫ দেশের দিকে। তারা কি শুধু আহ্বান জানিয়েই থেমে যাবে, নাকি বাস্তব স্বীকৃতি দিয়ে ফিলিস্তিনিদের স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বপ্নপূরণে এক যুগান্তকারী অধ্যায়ের সূচনা করবে, তা সময়ই বলে দেবে।

বাংলাধারা/এসআর