ঢাকা, বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫, ১৫ শ্রাবণ ১৪৩২

মূল্যস্ফীতি কমলেও চালের বাজারে উদ্বেগ

নিজস্ব প্রতিবেদক

 প্রকাশিত: জুলাই ২৮, ২০২৫, ০৫:০৮ বিকাল  

ছবি: সংগৃহিত

দেশে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে সামগ্রিক মূল্যস্ফীতি ধারাবাহিকভাবে কমেছে। তবে চালের দাম বাড়তে থাকায় উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) প্রকাশিত ‘ইকোনমিক আপডেট অ্যান্ড আউটলুক-জুলাই ২০২৫’ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত জুন মাসে মাঝারি, চিকন ও মোটা তিন ধরনের চালেই মূল্যস্ফীতি ১৫ শতাংশে পৌঁছেছে। গত এক বছরে চালের দামে ধারাবাহিক ঊর্ধ্বগতি লক্ষ্য করা গেছে এবং তা কমার কোনো ইঙ্গিত নেই। এমনকি বোরো ধানের ভালো ফলনও চালের বাজারে কোনো প্রভাব ফেলতে পারেনি।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ২০২৪ সালের ডিসেম্বর থেকে দেশে সামগ্রিক মূল্যস্ফীতি কমছে। ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারির পর প্রথমবার গত জুনে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের নিচে নেমেছে। এটি দেশের জন্য স্বস্তিদায়ক খবর। খাদ্যদ্রব্যের দাম হ্রাস, আন্তর্জাতিক বাজারের স্থিতিশীলতা, সরবরাহ ব্যবস্থার উন্নতি, নিয়ন্ত্রিত চাহিদা ব্যবস্থাপনা এবং ভারসাম্যপূর্ণ বিনিময় হার সামগ্রিক মূল্যস্ফীতি কমাতে ভূমিকা রেখেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুদ্রানীতিতে ঘোষিত ৭-৮ শতাংশ মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা পূরণের দিকেই অর্থনীতি অগ্রসর হচ্ছে। গত ছয় মাস ধরে রেপো সুদহার ১০ শতাংশে ধরে রাখার পাশাপাশি নীতি সুদহার নিয়ন্ত্রণ ও বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি কমানোয় বাংলাদেশ ব্যাংকের পদক্ষেপগুলোও কার্যকর হয়েছে।

তবে প্রতিবেদনে চালের দাম নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। জুন মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশের নিচে নেমে এলেও চালের অবদান মে মাসের ৪০ শতাংশ থেকে বেড়ে জুনে ৫০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। শুধু মাঝারি মানের চালই খাদ্য মূল্যস্ফীতিতে ২৫ শতাংশ অবদান রেখেছে, যেখানে মোটা চালের অবদান ছিল ১৭ দশমিক ৮২ শতাংশ। ইউএসডিএর গ্রেইন অ্যান্ড ফিড আপডেট অনুযায়ী, ২০২৪ সালের নভেম্বরে মোটা চালের গড় দাম গত এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ ছিল।

চালের দাম বাড়ার পেছনে সারের দাম, বীজ, শ্রম ও সেচ খরচ বৃদ্ধি, পরিবহন ব্যয়, ফলন-পরবর্তী ক্ষতি এবং মজুদের প্রবণতার মতো কারণগুলো প্রভাব ফেলছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে বাজারে সরবরাহ ঘাটতি বা সরবরাহ শৃঙ্খলে কোনো বিঘ্ন আছে কিনা তা নিবিড়ভাবে পর্যালোচনা করার আহ্বান জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে রেমিট্যান্স প্রবাহ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে এবং ডলারের বিপরীতে টাকার মান কিছুটা শক্তিশালী হয়েছে। পণ্য রপ্তানিতেও ইতিবাচক প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। তবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) আন্দোলনের কারণে গত জুন মাসে সরকারের রাজস্ব আদায়ে সাময়িক বিঘ্ন ঘটেছে।

বাংলাধারা/এসআর