ঢাকা, শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ১ কার্তিক ১৪৩২

সাধারণ বীমা কোম্পানির অধিকাংশের মুনাফা কমেছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

 প্রকাশিত: আগস্ট ২৪, ২০২৫, ১১:৪৯ দুপুর  

ছবি: সংগৃহিত

শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ৪৩টি সাধারণ বীমা কোম্পানি চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে কমবেশি নিট মুনাফা করেছে। তবে সার্বিকভাবে খাতটির মুনাফা সামান্য বেড়েছে বটে, কিন্তু বেশির ভাগ কোম্পানির মুনাফায় ছিল নিম্নমুখী প্রবণতা।

প্রথম ছয় মাসে খাতটির মোট নিট মুনাফা দাঁড়িয়েছে ৩১৭ কোটি টাকা, যেখানে গত বছরের একই সময়ে ছিল ৩১৩ কোটি টাকা। সামগ্রিক প্রবৃদ্ধি খুব বেশি না হলেও শীর্ষ কয়েকটি কোম্পানি মুনাফার বড় অংশ দখল করে রেখেছে। কেবল শীর্ষ পাঁচটি কোম্পানির মুনাফাই প্রায় ১৩৯ কোটি টাকা, যা পুরো খাতের ৪৪ শতাংশ।

এবারের পর্যালোচনায় দেখা গেছে, দ্বিতীয় প্রান্তিকে ২০টি কোম্পানির মুনাফা বেড়েছে, আর ২৩টির কমেছে। ছয় মাসের হিসাবে বেড়েছে ১৮টির এবং কমেছে ২৫টির। প্রথম প্রান্তিকে সম্মিলিত মুনাফা বেড়েছিল প্রায় ২ শতাংশ, কিন্তু দ্বিতীয় প্রান্তিকে বেড়েছে মাত্র ০.১০ শতাংশ। প্রথম প্রান্তিকে যেখানে নিট মুনাফা ছিল ১৫৬ কোটি ৪১ লাখ টাকা, দ্বিতীয় প্রান্তিকে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১৬০ কোটি ২৫ লাখ টাকায়।

অভিহিত মূল্যে ১০ টাকার শেয়ারের বিপরীতে সর্বাধিক ৫ টাকা ৩৯ পয়সা আয় করেছে রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্স। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে সেনা ইন্স্যুরেন্স, তাদের আয় ৩ টাকা ৪৭ পয়সা। গ্রিন ডেল্টা, প্রগতি, পাইওনিয়ার, বাংলাদেশ ন্যাশনাল, এশিয়া প্যাসিফিক, ক্রিস্টাল, ইস্টার্ন, ইউনাইটেড ও সিটি জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের আয় হয়েছে ১ টাকা থেকে ২ টাকা ৮২ পয়সার মধ্যে।

রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্সের সিইও খালেদ মামুন মনে করেন, মুনাফায় যে প্রবৃদ্ধি দেখা যাচ্ছে, তা প্রকৃত অর্থে প্রবৃদ্ধি নয়। কারণ, নতুন বড় কোনো বিনিয়োগ আসছে না, ফলে নতুন বীমার প্রয়োজনও হচ্ছে না। মূলত ব্যবসায়িক সুনাম এবং কিছু বড় কোম্পানি ও বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে পাওয়া প্রিমিয়ামের ওপর নির্ভর করেই তারা টিকে আছে।

জানুয়ারি থেকে জুন মেয়াদে সর্বাধিক ৫৬ কোটি ৬৮ লাখ টাকা মুনাফা করেছে রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্স, যা আগের বছরের তুলনায় প্রায় ৮ শতাংশ বেশি। দ্বিতীয় স্থানে গ্রিন ডেল্টা, তাদের মুনাফা ২৮ কোটি ২৫ লাখ টাকা—গত বছরের তুলনায় সামান্য কম। তৃতীয় স্থানে পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্স, মুনাফা সাড়ে ২১ কোটি টাকা, যা আগের বছর ছিল ২৫ কোটি টাকা। প্রগতি ইন্স্যুরেন্স করেছে ১৮ কোটি ৩৭ লাখ, সেনা ইন্স্যুরেন্স ১৩ কোটি ৮৮ লাখ, সিটি জেনারেল ১১ কোটি ১১ লাখ, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ৯ কোটি, এশিয়া প্যাসিফিক ৮ কোটি এবং ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স ৭ কোটি ৮৩ লাখ টাকা নিট মুনাফা।

দ্বিতীয় প্রান্তিকেও শীর্ষে ছিল রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্স। এপ্রিল-জুন সময়ে তাদের মুনাফা হয়েছে ৩২ কোটি ৮১ লাখ টাকা, যা গত বছর একই সময়ে ছিল ২৮ কোটি টাকা। এ সময় গ্রিন ডেল্টা করেছে প্রায় ১৮ কোটি, প্রগতি ১০ কোটি, পাইওনিয়ার ৮ কোটি ৩১ লাখ এবং সেনা ইন্স্যুরেন্স ৬ কোটি ২৮ লাখ টাকা নিট মুনাফা।

সব মিলিয়ে দেখা যাচ্ছে, সাধারণ বীমা খাতে সামগ্রিক মুনাফা সামান্য বেড়েছে। তবে অধিকাংশ কোম্পানি লাভের দিক থেকে পিছিয়ে গেছে, আর শীর্ষ কয়েকটি বড় কোম্পানি এখনো খাতটিকে টিকিয়ে রেখেছে।

বাংলাধারা/এসআর