একদল সংস্কার, আরেক দল নির্বাচন পিছিয়ে দিতে চায়: নাহিদ ইসলাম
প্রকাশিত: নভেম্বর ০২, ২০২৫, ০৪:২১ দুপুর
ছবি: সংগৃহিত
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, চলমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে একদল সংস্কারের পথে বাধা দিচ্ছে, আরেক দল নির্বাচনের সময় পিছিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করছে। তবে এনসিপি চায়, নির্ধারিত সময়েই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক এবং জুলাই সনদ আইনি ভিত্তি পাক।
রোববার (২ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর বাংলামোটরে দলের অস্থায়ী কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, “জামায়াতের কর্মকাণ্ডে মনে হচ্ছে তারা নির্বাচন পেছানোর অভিসন্ধি নিয়ে এগোচ্ছে। বিএনপি ও জামায়াত এখন গণভোটের তারিখকে কেন্দ্র করে রাজনীতি করছে। একদল সংস্কার ব্যাহত করছে, আরেকদল নির্বাচন বিলম্বিত করার চেষ্টায় আছে। আমরা চাই, যথাসময়ে নির্বাচন হোক এবং জুলাই সনদ বাস্তবায়িত হোক।”
তিনি আরও বলেন, “জুলাই সনদ আদেশ প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পক্ষ থেকেই জারি করতে হবে। রাষ্ট্রপতির পক্ষ থেকে এটি জারি হলে তা কফিনের শেষ পেরেক হিসেবে বিবেচিত হবে। কারণ এতে আইনি বৈধতা থাকবে না এবং জনগণও তা মেনে নেবে না।”
জুলাই সনদ নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে উল্লেখ করে এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, “অনেক দল সনদ সই করে অনৈক্য সৃষ্টি করেছে। যারা সনদ বাস্তবায়নের দাবিতে আন্দোলন করেছিল, তাদের বাদ দিয়ে সই করা জাতির সঙ্গে প্রতারণা। আমরা রাষ্ট্র সংস্কার চাই এবং গণপরিষদ নির্বাচনের রূপরেখাও দিয়েছি।”
গণভোট প্রসঙ্গে নাহিদ বলেন, “গণভোট নির্বাচনের আগে বা পরেও হতে পারে। জামায়াত এ বিষয়ে ভুল রাজনীতি করছে, আবার বিএনপির নেতারাও বিপরীত মন্তব্য করছেন। এতে পরিস্থিতি আরও জটিল হচ্ছে। সবাই একমত হলে গণভোট নির্বাচন-দিনেও করা সম্ভব।”
তিনি অভিযোগ করেন, “বিএনপি গণভোটের বিপক্ষে জনমত তৈরির চেষ্টা করছে, যা এক ধরনের রাজনৈতিক আতঙ্ক সৃষ্টি করছে। এতে কোনো ষড়যন্ত্র আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা উচিত।”
নির্বাচনে এনসিপির প্রস্তুতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমরা ৩০০ আসন থেকেই প্রার্থী দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি। বিভিন্ন এলাকায় সংগঠন ও প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ চলছে। চলতি মাসের মধ্যেই পূর্ণাঙ্গ প্রার্থীতালিকা ঘোষণা করা হবে। আমি নিজেও ঢাকায় থেকেই নির্বাচনে অংশ নেব।”
শাপলা প্রতীক বরাদ্দে কমিশনের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে নাহিদ বলেন, “আমাদের দূরে রাখতেই নির্বাচন কমিশন দেরি করছে। তারা এক মাস আগেই এটি করতে পারতো। নতুন দল হিসেবে আমাদের প্রতি আরও আন্তরিক হওয়া উচিত ছিল।”
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “ভারত শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দিয়ে জুলাই গণহত্যাকে পরোক্ষভাবে সমর্থন দিচ্ছে। গণঅভ্যুত্থান প্রশ্নে ভারত তার অবস্থান না বদলালে দুই দেশের সম্পর্ক শীতলই থাকবে।”
নাহিদ ইসলাম বলেন, “সংস্কারের পক্ষে না থাকলে কারও সঙ্গে জোট সম্ভব নয়। বাস্তবায়ন আদেশের প্রথম খসড়ায় ২৭০ দিনের মধ্যে সংস্কার প্রস্তাব সংবিধানে যুক্ত হওয়ার যে বিধান ছিল, আমরা সেটিকেই সমর্থন করি। এর ব্যত্যয় হলে সমর্থন পুনর্বিবেচনা করতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “গণভোট আগে বা নির্বাচনের দিন, যখনই হোক, তা মূল বিষয় নয়। তবে নির্বাচন বিলম্বিত করার কোনো প্রচেষ্টা জনগণ মেনে নেবে না। ফেব্রুয়ারিতেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত।”
বাংলাধারা/এসআর
