মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যার মূল আসামি গৃহকর্মী আয়েশা গ্রেপ্তার
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১০, ২০২৫, ০২:০৯ দুপুর
ছবি: সংগৃহিত
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে নৃশংসভাবে হত্যা করে পালিয়ে যাওয়া গৃহকর্মী আয়েশাকে ঝালকাঠি জেলা থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার সকালে মোহাম্মদপুর থানার একটি দল অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে।
থানার ওসি মেজবাহ উদ্দিন কালের কণ্ঠকে জানান, ঘটনার পর থেকেই আয়েশাকে ধরতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তল্লাশি চালানো হচ্ছিল। অবশেষে ঝালকাঠি এলাকায় তার অবস্থান শনাক্ত হলে পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে।
গত সোমবার (৮ ডিসেম্বর) সকালে মোহাম্মদপুরের বাসায় লায়লা ফিরোজ (৪৮) ও তার স্কুলপড়ুয়া মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজকে (১৫) ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। ঘটনার পরপরই নিখোঁজ হয়ে যান তাদের বাসার গৃহকর্মী আয়েশা।
সেদিন রাতেই নিহত লায়লা ফিরোজের স্বামী, বিদ্যালয়ের শিক্ষক আ জ ম আজিজুল ইসলাম মোহাম্মদপুর থানায় আয়েশাকে একমাত্র আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার এজাহারে তিনি উল্লেখ করেন, সোমবার সকাল ৭টার দিকে তিনি উত্তরা এলাকায় কর্মস্থলে চলে যান। বারবার ফোন করেও স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পেরে বাসায় ফিরে দেখেন, স্ত্রী ও মেয়ের নিথর দেহ রক্তে ভিজে মেঝেতে পড়ে আছে।
ঘটনার পর পুলিশের সংগ্রহ করা সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, সকাল ৭টা ৫১ মিনিটে আয়েশা স্বাভাবিকভাবেই বাসায় প্রবেশ করেন। এরপর সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটে নাফিসার স্কুলড্রেস পরে তড়িঘড়ি করে বাসা থেকে বেরিয়ে যান। বের হওয়ার সময় তিনি বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার এবং নগদ টাকা নিয়ে যান বলেও জানা গেছে।
সুরতহাল রিপোর্টে লায়লা ফিরোজের শরীরে প্রায় ৩০টি ছুরিকাঘাতের চিহ্ন এবং নাফিসার শরীরে ৪টি ছুরিকাঘাত পাওয়ার কথা উল্লেখ রয়েছে। ঘটনাটি পরিকল্পিত ছিল কি না, নাকি ব্যক্তিগত ক্ষোভ থেকে সংঘটিত হয়েছে, সে বিষয়ে পুলিশ এখনো তদন্ত করছে।
মঙ্গলবার সকালে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে লায়লা ও নাফিসার মরদেহ তাদের নাটোরের দক্ষিণ বড়গাছা গ্রামের বাড়িতে নেওয়া হয়। জোহরের নামাজে জানাজা শেষে মা–মেয়েকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
গ্রেপ্তার আয়েশাকে ঢাকায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে পুলিশ। তদন্তসংশ্লিষ্টরা বলছেন, জোড়া হত্যার কারণ উদঘাটনে তাকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করা হবে।
বাংলাধারা/এসআর
