ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫, ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ইয়েমেন থেকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করল ইসরাইল, আতঙ্কে রাজধানী তেল আবিবসহ বিস্তীর্ণ অঞ্চল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

 প্রকাশিত: মে ২২, ২০২৫, ০৮:১১ সকাল  

ছবি: সংগৃহিত

ইয়েমেন থেকে ইসরাইলের দিকে ছোড়া একটি ক্ষেপণাস্ত্র বৃহস্পতিবার ভোররাতে প্রতিহত করেছে ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। ক্ষেপণাস্ত্রটি মাঝ আকাশেই সফলভাবে ধ্বংস করা হয় বলে জানিয়েছে তারা। এ ঘটনার পর রাজধানী তেল আবিবসহ ইসরাইলের মধ্যাঞ্চলে একযোগে সাইরেন বাজানো হয়, যার ফলে বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে ব্যাপক আতঙ্ক। লাখো বাসিন্দা ছুটে যান আশ্রয়কেন্দ্রের দিকে।

আইডিএফ এক বিবৃতিতে জানায়, "ক্ষেপণাস্ত্রটি আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় ধরা পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই সেটিকে গতি ও গতিপথ বিশ্লেষণ করে সফলভাবে ধ্বংস করা হয়েছে।" এই হামলায় এখন পর্যন্ত কোনো হতাহত বা ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।

ঘটনার পরপরই ইসরাইলি সামরিক বাহিনী একটি পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শুরু করেছে। যদিও হামলার দায় কেউ স্বীকার করেনি, তবে সন্দেহের তীর ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীদের দিকেই। অতীতে হুথিরা সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিভিন্ন স্থানে এ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে।

ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন এবং আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আরও জোরদারের নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানা গেছে। দেশটির নিরাপত্তা সংস্থাগুলো ইতিমধ্যে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।

মধ্যপ্রাচ্যে চলমান উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে এই হামলাকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ মনে করছেন বিশ্লেষকরা। ইরানঘনিষ্ঠ হুথি গোষ্ঠী সম্প্রতি ইসরাইলের বিরুদ্ধে সরাসরি অবস্থান গ্রহণ করেছে এবং গাজায় হামলার প্রতিবাদে বিভিন্ন হুমকি দিয়েছে। এই হামলা সেই হুমকির বাস্তব রূপ কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

আইডিএফ জানিয়েছে, পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে এবং নতুন কোনো তথ্য জানা গেলে তাৎক্ষণিকভাবে জনসাধারণকে জানানো হবে।

হঠাৎ ভোররাতের সাইরেন এবং আশ্রয়কেন্দ্রে দৌড়ে যাওয়ার অভিজ্ঞতা অনেকের জন্য ছিলো বিভীষিকাময়। এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, "ঘুম ভেঙে দেখি সাইরেন বাজছে, সঙ্গে সঙ্গে দুই সন্তানকে নিয়ে নিচে আশ্রয়কক্ষে চলে যাই। কী হচ্ছে বুঝে ওঠার আগেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।"

সাম্প্রতিক সময়ে ইসরাইলের উপর দূরপাল্লার হামলার ঝুঁকি বাড়ছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে, বিশেষ করে হুথিদের মতো দূরবর্তী গোষ্ঠীগুলোর মাধ্যমে।

ইয়েমেন থেকে ইসরাইলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের ঘটনা মধ্যপ্রাচ্যের জটিল নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে আরও উদ্বেগজনক করে তুলেছে। ঘটনার নেপথ্যে কারা রয়েছে এবং এটি ভবিষ্যতে নতুন কোনো সামরিক সংঘাতের ইঙ্গিত দিচ্ছে কি না- সে প্রশ্ন এখন সবার সামনে।

 

বাংলাধারা/এসআর