বায়ুর মান আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কা
বিষাক্ত ধোঁয়াশায় আচ্ছন্ন দিল্লি, দূষণ ১৬ গুণ বেশি
প্রকাশিত: অক্টোবর ২০, ২০২৫, ০২:৩৩ দুপুর
_20251020143256_original_6.webp)
ছবি: সংগৃহিত
ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি আবারও ভয়াবহ বায়ুদূষণের কবলে পড়েছে। সোমবার সকাল থেকে শহরজুড়ে ঘন ও বিষাক্ত ধোঁয়াশা ছড়িয়ে পড়ে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মানদণ্ডের তুলনায় রাজধানীর বায়ুদূষণের মাত্রা রেকর্ড ১৬ গুণ বেশি বলে জানিয়েছে পর্যবেক্ষণ সংস্থাগুলো।
প্রায় তিন কোটি মানুষের এই শহর শীত এলেই নিয়মিতভাবে দূষণের দমবন্ধ পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়। ঠান্ডা বাতাসে দূষণকারী উপাদান মাটির কাছাকাছি আটকে থাকে। এর সঙ্গে যোগ হয় খড় পোড়ানো, শিল্পকারখানার ধোঁয়া ও যানবাহনের কালো ধোঁয়া। সম্প্রতি দীপাবলি উৎসবে ব্যাপক আতশবাজি ফাটানোর কারণে পরিস্থিতি আরও মারাত্মক আকার নিয়েছে। যদিও সুপ্রিম কোর্ট ‘সবুজ আতশবাজি’ ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছিল, যা তুলনামূলক কম ক্ষতিকর, কিন্তু বাস্তবে নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষিত হয়েছে ব্যাপকভাবে।
বায়ুমান পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা ‘আইকিউএয়ার’ জানিয়েছে, সোমবার দিল্লির বিভিন্ন এলাকায় প্রতি ঘনমিটারে পিএম ২.৫ কণার মাত্রা ছুঁয়েছে ২৪৮ মাইক্রোগ্রাম। এই অতিক্ষুদ্র কণা রক্তপ্রবাহে প্রবেশ করে ক্যানসারসহ গুরুতর রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
সরকারের এয়ার কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট কমিশন সতর্ক করেছে, আগামী দিনগুলোতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। এজন্য ডিজেল জেনারেটরের ব্যবহার সীমিত করা এবং নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
দূষণ নিয়ন্ত্রণে এবার প্রথমবারের মতো ‘ক্লাউড সিডিং’ প্রযুক্তি ব্যবহারের প্রস্তুতি চলছে। আকাশে বিশেষ রাসায়নিক ছুড়ে কৃত্রিমভাবে বৃষ্টি ঘটিয়ে বাতাস পরিষ্কার করার চেষ্টা করা হবে। দিল্লির পরিবেশমন্ত্রী মনজিন্দর সিং সিরসা জানিয়েছেন, এরই মধ্যে পরীক্ষামূলক উড়ান ও পাইলট প্রশিক্ষণ সম্পন্ন হয়েছে।
অতীতের পরিসংখ্যানও ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরছে। চিকিৎসা জার্নাল দ্য ল্যানসেট প্ল্যানেটারি হেলথ-এর তথ্য অনুযায়ী, ২০০৯ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে ভারতে বায়ুদূষণের কারণে প্রাণ হারিয়েছে প্রায় ৩৮ লাখ মানুষ। আর ইউনিসেফ সতর্ক করেছে, দূষিত বাতাসে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে শিশুরা; বাড়ছে তাদের শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ ও দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্যঝুঁকি।
বাংলাধারা/এসআর