নাঈমুল ইসলাম খানের ‘অবৈধ’ সম্পদ অনুসন্ধানে দুদক
প্রকাশিত: জানুয়ারী ০৮, ২০২৫, ১০:৩৬ রাত

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সর্বশেষ প্রেস সচিব জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক নাঈমুল ইসলাম খানের বিরুদ্ধে ওঠা কথিত অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
মঙ্গলবার অনুসন্ধানের বিষয়টি অনুমোদনের কথা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা ও উপপরিচালক মো. আকতারুল ইসলাম।
তবে নাঈমুল ইসলাম খানের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিস্তারিত তিনি জানাতে পারেননি।
বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)-এর অনুসন্ধানের বরাত দিয়ে কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন ওপর ভিত্তি করে অভিযোগ আমলে নেওয়া হয়েছে।
বিএফআইইউ এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, নাঈমুল ইসলাম খান ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে ১৬৩টি ব্যাংক হিসাব পাওয়া গেছে। এসব হিসাবে প্রায় ৩৮৬ কোটি টাকা জমা হয়েছে, যার মধ্যে ৩৭৯ কোটি ৫২ লাখ টাকা ইতোমধ্যে উত্তোলন করা হয়েছে। বর্তমানে ওই হিসাবগুলোতে রয়েছে মাত্র ৬ কোটি ২৭ লাখ টাকা।
নাঈমুল ইসলাম খানের ব্যক্তিগত নামে রয়েছে ৯১টি ব্যাংক হিসাব, ১৯৯০ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত যেখানে মোট ২৩৮ কোটি ৯৮ লাখ টাকা জমা হয়েছিল। এর মধ্যে ২৩৮ কোটি ৩৪ লাখ টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। বর্তমানে হিসাবগুলোতে রয়েছে ৬৪ লাখ টাকা।
তার স্ত্রী নাসিমা খান মন্টির নামে ১৩টি ব্যাংক হিসাবে জমা হয়েছে ১৬ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। এর মধ্যে ১৩ কোটি টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। ২০০৪ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত এসব লেনদেন হয়েছে।
এছাড়া, নাঈমুল ইসলাম খানের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ৪৬টি ব্যাংক হিসাবে মোট জমা হয়েছিল ১২৭ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। প্রায় সব অর্থ উত্তোলনের পর এসব হিসাবে এখন ২১ লাখ টাকা রয়েছে। এসব লেনদেন হয়েছে ২০০৮ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে।
নাঈমুল ইসলাম খান এবং তার স্ত্রী-সন্তানরা মোট ১২টি ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করেন। এসব কার্ডের সর্বমোট সীমা ২৮ লাখ ৩৫ হাজার ৩৬৭ টাকা। কার্ডগুলোতে বর্তমানে বকেয়া পড়েছে ৪৮ হাজার ৪০৮ টাকা।
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর, গত ২৫ আগস্ট বিএফআইইউ নাঈমুল ইসলাম খানের ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা হয়েছে। স্থগিত করা হয়েছে তার স্ত্রীর ব্যাংক হিসাব। তবে এর আগেই তারা প্রায় সব অর্থ উত্তোলন করে নিয়েছেন।
সরকার পতনের দুই মাস আগে দৈনিক আমাদের নতুন সময়ের এমিরিটাস এডিটর নাঈমুল ইসলাম খান শেখ হাসিনার প্রেস সচিব হিসেবে নিয়োগ পান।
২০২৪ সালের ৬ জুন তার নিয়োগের প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
সে বছর ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর প্রেস সচিব নাঈমুল ইসলাম খান আত্মগোপনে চলে যান। এরপর তিনি তার পরিচালিত পত্রিকাগুলো বন্ধের ঘোষণা দেন।