নেপালে কারফিউ প্রত্যাহার, স্বাভাবিক হচ্ছে জনজীবন
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২৫, ০৬:৪৫ বিকাল

ছবি: সংগৃহিত
নেপালে কয়েকদিনের সহিংস বিক্ষোভ ও অনিশ্চয়তার পর ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে উঠছে দেশটির জনজীবন। শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) কাঠমান্ডু উপত্যকাসহ দেশজুড়ে কারফিউ তুলে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে সেনাবাহিনী।
শুক্রবার রাতে রাজধানীর শীতল নিবাসে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন সুশীলা কারকি। প্রেসিডেন্ট রামচন্দ্র পাওদেলের কাছে শপথ নেওয়ার পরপরই তিনি নেপালের পার্লামেন্ট ভেঙে দেন এবং ২০২৬ সালের ৫ মার্চ জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেন। এতে কয়েকদিন ধরে চলা রাজনৈতিক অস্থিরতার অবসান ঘটতে শুরু করেছে।
বিক্ষোভের সূত্রপাত হয় সোমবার, যখন নিবন্ধনহীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার ও দুর্নীতি দমনের দাবিতে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে আন্দোলন শুরু হয়। আন্দোলন দ্রুত সহিংস রূপ নেয়। নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে বহু হতাহতের ঘটনা ঘটে। এ পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫১ জনে এবং আহত হয়েছেন এক হাজারেরও বেশি মানুষ। নিহতদের মধ্যে সাধারণ মানুষ, আন্দোলনকারী, বন্দি ও পুলিশ সদস্য রয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলি ও তার মন্ত্রিসভার সদস্যরা পালিয়ে আত্মগোপনে যেতে বাধ্য হন।
কারফিউ তুলে নেওয়ার পর শনিবার থেকে দোকানপাট, বাজার, শপিং মল খুলে যাচ্ছে, রাস্তায় ফিরেছে গাড়ির জট, আবারও দূরপাল্লার বাস ছাড়তে শুরু করেছে। সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন স্থানে পরিচ্ছন্নতা অভিযান চলছে। আন্দোলনকারীদের আগুনে পুড়ে বহু সরকারি ভবন ছাই হয়ে গেছে।
এদিকে সহিংসতার সুযোগে দেশের বিভিন্ন কারাগার থেকে প্রায় সাড়ে ১৩ হাজার বন্দি পালিয়ে যায়। তাদের মধ্যে এক হাজারকে পুনরায় গ্রেপ্তার করা সম্ভব হলেও বাকিরা এখনও অধরা বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
সুশীলা কারকির শপথ গ্রহণ ও নির্বাচন ঘোষণার মধ্য দিয়ে আপাতত নেপালে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার আভাস মিলছে। সেনাবাহিনীর মুখপাত্র জানিয়েছেন, চলাফেরায় আর কোনো বিধিনিষেধ নেই। কয়েকদিনের ভয়াবহ সহিংসতা ও অচলাবস্থার পর নতুন সরকারের উদ্যোগে নেপালের জনজীবন ধীরে ধীরে ফিরছে স্বাভাবিক ছন্দে।
বাংলাধারা/এসআর