লিবিয়ার উপকূলে নৌকায় আগুন, অন্তত ৫০ সুদানি শরণার্থীর করুণ মৃত্যু
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২৫, ১১:১৩ দুপুর

ছবি: সংগৃহিত
লিবিয়ার উপকূলে শরণার্থীবাহী নৌকায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ৫০ জন সুদানি শরণার্থীর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় প্রাণে বেঁচে গেছেন ২৪ জন, যাদের উদ্ধার করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) জানিয়েছে, দুর্ঘটনার সময় নৌকাটিতে মোট ৭৫ জন শরণার্থী ছিলেন।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) আল-জাজিরা এ তথ্য প্রকাশ করে। আইওএম এক্স-এ (সাবেক টুইটার) পোস্ট দিয়ে বলেছে, এমন মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঠেকাতে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া এখন সময়ের দাবি।
ভূমধ্যসাগরীয় পথে শরণার্থীদের দুর্ঘটনায় পড়া নতুন কিছু নয়। এর আগেও বহুবার প্রাণহানি ঘটেছে। গত মাসেই ইয়েমেন উপকূলে একটি নৌকা ডুবে অন্তত ৬৮ জনের মৃত্যু হয়। নিখোঁজ হন আরও অনেকে। শুধু ২০২৪ সালেই ভূমধ্যসাগরে অন্তত ২ হাজার ৪৫২ শরণার্থী ও অভিবাসী প্রাণ হারান বা নিখোঁজ হন বলে আইওএমের পরিসংখ্যানে জানা গেছে। বিশ্বের সবচেয়ে প্রাণঘাতী সমুদ্রপথগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম।
২০১১ সালে মুয়াম্মার গাদ্দাফির পতনের পর লিবিয়া আফ্রিকা থেকে ইউরোপগামী অভিবাসীদের প্রধান ট্রানজিট রুটে পরিণত হয়। গাদ্দাফির আমলে অনেকে লিবিয়ায় কাজের সুযোগ পেতেন, কিন্তু পরবর্তীতে দেশটিতে মিলিশিয়া গোষ্ঠীগুলোর সংঘাতে স্থিতিশীলতা ভেঙে পড়ে। তখন থেকেই হাজারো মানুষ জীবন ঝুঁকিতে ফেলে ইউরোপমুখী নৌযাত্রায় নামছেন।
শুধু এ বছরই একের পর এক দুর্ঘটনায় বহু প্রাণহানি ঘটেছে। গত আগস্টে ইতালির লাম্পেদুসা দ্বীপের কাছে দুটি নৌকা ডুবে ২৭ জনের মৃত্যু হয়। তারও আগে জুনে লিবিয়ার উপকূলে দুটি জাহাজডুবিতে অন্তত ৬০ জন নিহত বা নিখোঁজ হন।
মানবাধিকার সংস্থা ও জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার দাবি, লিবিয়ায় আটক শরণার্থী ও অভিবাসীরা নানাভাবে নির্যাতন, ধর্ষণ ও অর্থ আদায়ের শিকার হচ্ছেন। এ অবস্থায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের পদক্ষেপ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। অভিবাসন ঠেকাতে লিবিয়ার কোস্টগার্ডকে সরঞ্জাম ও অর্থ সহায়তা দেওয়া হলেও, ওই বাহিনীর সঙ্গে মানবাধিকার লঙ্ঘনে জড়িত মিলিশিয়া গোষ্ঠীর সম্পর্ক থাকার অভিযোগ রয়েছে।
এনজিওগুলো বলছে, সরকারি সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ কার্যক্রম কমে যাওয়া এবং মানবাধিকার সংস্থার তৎপরতা সীমিত হওয়ায় ভূমধ্যসাগরীয় সমুদ্রপথ আরও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ফলে যুদ্ধ, সংঘাত ও নির্যাতন থেকে পালিয়ে আসা বহু মানুষ লিবিয়ায় আটকা পড়ে অমানবিক পরিস্থিতিতে দিন কাটাতে বাধ্য হচ্ছেন।
বাংলাধারা/এসআর