ঈদে বাজারে আসছে নতুন টাকা, থাকছে না কোনো ব্যক্তির ছবি: গভর্নর
প্রকাশিত: মে ২৪, ২০২৫, ০৩:০৫ দুপুর

ফাইল ছবি
ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে বাজারে আসছে নতুন নকশার টাকা। তবে এবারের নোটগুলোতে থাকছে না কোনো ব্যক্তির ছবি- বরং স্থান পাচ্ছে দেশের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস ও ঐতিহাসিক স্থাপনার প্রতিচ্ছবি। শনিবার (২৪ মে) সকালে রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানান বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) নতুন ‘ক্রেডিট এনহ্যান্সমেন্ট স্কিম’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গভর্নর বলেন, “এই ঈদেই বাজারে আসবে ১০০০, ৫০ ও ২০ টাকার নতুন নোট। এগুলোতে কোনো ব্যক্তির ছবি থাকবে না, বরং তুলে ধরা হবে জাতির ইতিহাস, ঐতিহ্য ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপত্যনির্ভর প্রতীকসমূহ।”
টাঁকশাল সূত্রে জানা গেছে, ইতোমধ্যেই ২০ টাকার নতুন নোট ছাপার কাজ প্রায় সম্পন্ন হয়েছে এবং আগামী সপ্তাহেই তা বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এরপর ধাপে ধাপে ৫০ ও ১০০০ টাকার নোট ছাপিয়ে ব্যাংকে বুঝিয়ে দেওয়া হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক তখন বাজারে ছাড়ার সময় নির্ধারণ করবে।
টাঁকশালের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, একসঙ্গে তিনটির বেশি নোট ছাপানোর সক্ষমতা নেই তাদের, তাই প্রথম ধাপে এই তিনটি মূল্যমানের নোট ছাপা হচ্ছে। উল্লেখ্য, নতুন ডিজাইনের নোট ছাপাতে সময় লাগে প্রায় এক থেকে দেড় বছর।
গত আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার গত ডিসেম্বরেই নতুন ডিজাইনের নোট বাজারে আনার সিদ্ধান্ত নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় চলতি মাস থেকে টাঁকশালে ছাপার কাজ শুরু হয়।
অর্থপাচার বন্ধ ও পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনা অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম রাজনৈতিক অঙ্গীকার বলেও জানান গভর্নর। তিনি বলেন, “বিশ্বব্যাপী গণমাধ্যমে অর্থ পাচারসংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশিত হওয়ায় আন্তর্জাতিক চাপ তৈরি হয়েছে। এরই মধ্যে পাচারকৃত অর্থের একটি অংশ ‘ফ্রিজ’ করা সম্ভব হয়েছে, যা অর্থ ফেরত আনার প্রথম ধাপ হিসেবে ধরা হচ্ছে।”
প্রান্তিক উদ্যোক্তাদের ব্যাংক ঋণ পাওয়ার পথে যেসব বাধা রয়েছে, তা দূর করতেই ‘ক্রেডিট এনহ্যান্সমেন্ট স্কিম’ চালু করা হয়েছে। এই স্কিমের আওতায় পিকেএসএফ-এর অংশীদার মাইক্রোফাইন্যান্স প্রতিষ্ঠানগুলোকে ২৪০ কোটি টাকার রিজার্ভ তহবিলের বিপরীতে ব্যাংক গ্যারান্টি দেওয়া হবে।
গভর্নর বলেন, “ঋণ গ্যারান্টির বিপরীতে এককালীন মাত্র ০.৫ শতাংশ কমিশন নেওয়া হবে। এর ফলে ছোট উদ্যোক্তাদের ঋণ পাওয়ার পথ সুগম হবে।”
প্রথম পর্যায়ে পাঁচটি বেসরকারি ব্যাংক ও নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান এ প্রকল্পে অংশ নিয়েছে। স্কিমটি বাস্তবায়নে সরকার ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) যৌথভাবে সহায়তা দিচ্ছে।
অনুষ্ঠানে গভর্নর আরও বলেন, “দেশে আর্থিক সাক্ষরতা বাড়ানো জরুরি। এজন্য প্রতিটি স্কুলের সঙ্গে একটি করে ব্যাংকের অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার আহ্বান জানাচ্ছি। শিক্ষার্থীদের ছোটবেলা থেকেই সঞ্চয় ও ব্যাংকিং বিষয়ে ধারণা দেওয়া গেলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম হবে আরও সচেতন ও দক্ষ।”
বাংলাধারা/এসআর