ইন্টারনেট সেবায় বড় স্বস্তি: ব্যান্ডউইথের দাম কমালো বিটিআরসি
প্রকাশিত: মে ২২, ২০২৫, ০৮:২১ রাত

ছবি: সংগৃহিত
দেশের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের জন্য আসছে বড় স্বস্তির খবর। ব্যান্ডউইথের দাম কমিয়ে নতুন ট্যারিফ ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। এতে করে ইন্টারনেট সেবার ব্যয় কমে আসবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। নতুন এই দাম আগামী ১ জুলাই ২০২৫ থেকে কার্যকর হবে।
বিটিআরসি জানিয়েছে, সরকারি ও বেসরকারি আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট গেটওয়ে (আইআইজি) অপারেটরদের জন্য নতুন ট্যারিফ চূড়ান্ত করা হয়েছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের অনুমোদনের পর। এবারই প্রথম দীর্ঘ মেয়াদে- পাঁচ বছরের জন্য- এ ধরনের দাম নির্ধারণ করল সংস্থাটি। তবে বাজার পরিস্থিতি ও গ্রাহকের স্বার্থ বিবেচনায় প্রয়োজন হলে ট্যারিফে পরিবর্তন আনার সুযোগ থাকবে।
নতুন দাম অনুযায়ী, ব্যান্ডউইথের প্রতি এমবিপিএস (Mbps) মূল্যে সর্বনিম্ন ২৩০ টাকা এবং সর্বোচ্চ ২৯৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
- ১ থেকে ১০০০ এমবিপিএস পর্যন্ত ব্যান্ডউইথের দাম হবে প্রতি এমবিপিএস ২৬৫ থেকে ২৯৯ টাকা।
- ১ লাখ এমবিপিএস বা তার বেশি ব্যান্ডউইথের জন্য প্রতি এমবিপিএস দাম হবে ২৩০ থেকে ২৫৫ টাকা।
ঢাকা ও ঢাকার বাইরের জন্য আলাদা ফ্লোর (সর্বনিম্ন) ও সিলিং (সর্বোচ্চ) মূল্য নির্ধারণের সুযোগ রাখা হয়েছে, তবে তা নির্ধারিত সীমার মধ্যেই থাকতে হবে।
মূল্য নির্ধারণের পাশাপাশি সেবার মান নিয়েও কড়া নির্দেশনা দিয়েছে কমিশন। ‘গ্রেড অব সার্ভিস’ ভিত্তিতে তিনটি মানদণ্ড- গ্রেড এ, বি ও সি- নির্ধারণ করা হয়েছে।
- গ্রেড ‘এ’ মানের সেবায় আপটাইম থাকতে হবে ৯৯.৯%, অর্থাৎ বছরে সর্বোচ্চ ৫২৬ মিনিটের বেশি ডাউনটাইম গ্রহণযোগ্য নয়।
- প্রতিটি আইআইজি অপারেটরকে নিজ নিজ গ্রেড অনুযায়ী গ্রাহক সেবা, রিপোর্টিং এবং নেটওয়ার্ক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে হবে।
নির্দিষ্ট পরিমাণ ব্যান্ডউইথ নেওয়ার ক্ষেত্রে চুক্তির একটি ন্যূনতম সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে:
- ১০ জিবিপিএসের বেশি ব্যান্ডউইথ নিলে কমপক্ষে ৬ মাসের চুক্তি বাধ্যতামূলক।
- ৩০ জিবিপিএসের বেশি হলে অন্তত এক বছরের চুক্তি করতে হবে।
এই সময়ের মধ্যে সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান নির্ধারিত মান বজায় রাখতে ব্যর্থ হলে, গ্রাহক প্রতিষ্ঠান সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে পারবে।
বিটিআরসি আরও জানিয়েছে, কমিশনের অনুমোদিত আইআইজি পপ (PoP) থেকে সেবা প্রদান করতে হবে। অনুমোদন ছাড়া কোনো নতুন পণ্য বা সেবা চালু করা যাবে না।
প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানকে তাদের ট্যারিফ ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে এবং কমিশনের নির্ধারিত মূল্যসীমার বাইরে কোনো সেবা প্রদান করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই সিদ্ধান্ত দেশে ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তি বাড়াতে সহায়ক হবে। ইন্টারনেটের দাম কমায় ভোক্তা পর্যায়ে সেবা আরও সহজলভ্য হতে পারে।
এছাড়া টেলিকম ও আইটি খাতের উদ্যোক্তারা আশা করছেন, এ পদক্ষেপের ফলে ছোট ও মাঝারি ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডাররাও স্বস্তিতে ব্যবসা পরিচালনা করতে পারবেন।
বাংলাধারা/এসআর