ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫, ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

সরকারি দপ্তরে দলীয় সংশ্লিষ্টতা:

আমলা-কর্মচারীদের তালিকা প্রকাশের দাবি ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের

নিউজ ডেস্ক

 প্রকাশিত: মে ১৯, ২০২৫, ০৭:১৩ সকাল  

ছবি: সংগৃহিত

সরকারি প্রশাসন ও রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক প্রভাব রয়েছে উল্লেখ করে এ সংক্রান্ত কর্মকর্তাদের তালিকা প্রকাশের দাবি জানিয়েছে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন। একইসঙ্গে দলীয় আনুগত্যের ভিত্তিতে নিযুক্ত বা প্রভাবিত আমলা, কর্মচারী ও গণমাধ্যম সংশ্লিষ্টদের বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।

রোববার (১৮ মে) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের আহ্বায়ক মো. নজরুল ইসলাম, সদস্যসচিব ফারহান সরকার, যুগ্ম আহ্বায়ক মো. তানভীর ইসলাম, যুগ্ম সদস্যসচিব মো. আবিদ ইসলাম এবং জুলাই আন্দোলনের সময় গুলিবিদ্ধ আহত ছাত্রনেতা সৌরভ।

সংগঠনটি দাবি করেছে, তারা ইতোমধ্যে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও প্রতিষ্ঠানে কর্মরত এমন প্রায় ৩০০ জন কর্মকর্তা ও কর্মচারীর তালিকা তৈরি করেছে, যারা আওয়ামী লীগের সঙ্গে সরাসরি বা পরোক্ষভাবে জড়িত। তালিকায় রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি), সচিবালয়, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক, হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশন, গণপূর্ত অধিদপ্তরসহ গুরুত্বপূর্ণ কিছু দপ্তরের কর্মকর্তাদের নাম।

সংবাদ সম্মেলনে পাঠ করা লিখিত বক্তব্যে ফারহান সরকার বলেন, সরকারি দপ্তরে দলীয় নিয়ন্ত্রণ এবং প্রশাসনকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করে যে ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে, তার অবসান ছাড়া প্রকৃত গণতন্ত্র সম্ভব নয়।

তিনি সংগঠনের পক্ষ থেকে চার দফা দাবি তুলে ধরেন:

  • প্রশাসনের সব স্তরে আওয়ামী লীগের অনুসারী ও মদদপুষ্ট আমলা-কর্মচারীদের সুনির্দিষ্ট তালিকা তৈরি করে তা জনসমক্ষে প্রকাশ করতে হবে।
  • ফ্যাসিবাদী কর্মকাণ্ডে জড়িত কর্মকর্তাদের চাকরিচ্যুত ও গ্রেপ্তার করে তাদের বিরুদ্ধে বিচার প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে।
  • প্রশাসনের মধ্যে ফ্যাসিবাদী চিন্তাধারার প্রচার ও প্রভাব বিস্তারের সব পথ বন্ধ করতে হবে।
  • একটি স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠন করে ফ্যাসিবাদের পৃষ্ঠপোষক রাজনৈতিক শক্তিকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে হবে।

সংগঠনটি দাবি করেছে, শুধু প্রশাসনেই নয়, দেশের বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমেও ক্ষমতাসীন দলের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিরা কাজ করছেন, যারা সংবাদ কাভারেজে পক্ষপাতিত্ব করছেন এবং আন্দোলন-বিরোধী প্রোপাগান্ডা চালাচ্ছেন। এদের বিরুদ্ধেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়।

আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, রাষ্ট্রকে দলীয় নিয়ন্ত্রণের বাইরে আনতে হলে প্রশাসন ও মিডিয়ায় গড়ে ওঠা এই প্রভাবমুক্ত করতে হবে। না হলে জনগণের ভোট ও মতের প্রতিফলন ঘটবে না।”

তিনি জানান, এই দাবিগুলো নিয়ে আগামী দিনেও তারা দেশজুড়ে কর্মসূচি চালিয়ে যাবে এবং তালিকা হালনাগাদ করে নতুনভাবে প্রকাশ করা হবে।

সংগঠনটি দাবি করেছে, দলীয়করণ বন্ধ করে প্রশাসনকে নিরপেক্ষ না করা হলে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ হবে।


বাংলাধারা/এসআর