নতুন সরকার পেলেও নতুন দেশ এখনো পাইনি: নাহিদ ইসলাম
প্রকাশিত: জুলাই ২৭, ২০২৫, ১২:৫০ রাত

ছবি: সংগৃহিত
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, “দুঃখজনক হলেও সত্য, আমরা নতুন সরকার পেলেও এখনো নতুন দেশ পাইনি। নতুন দেশ গড়ার আগ পর্যন্ত আমাদের লড়াই চলবে।”
শনিবার (২৬ জুলাই) রাত ৯টায় কিশোরগঞ্জে ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’-র অংশ হিসেবে আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, “গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পার হয়ে গেলেও মানুষ তার অধিকার ফিরে পায়নি। চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসের আস্তানা এখনও গড়ে উঠছে। দুর্নীতি রুখতে রাষ্ট্রযন্ত্র কার্যকর ভূমিকা রাখছে না। আমরা বলেছিলাম, ফ্যাসিবাদী পুরোনো কাঠামো ভেঙে নতুন রাষ্ট্র ও নতুন সংবিধানের মাধ্যমে প্রকৃত গণতান্ত্রিক সরকার গঠন করতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা এমন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম যেখানে প্রতিটি নাগরিক সমান অধিকার ও মর্যাদা পাবে। কিশোরগঞ্জ রাষ্ট্রপতি দিয়েছে, কিন্তু শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা দেয়নি। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নেই, হাসপাতালে চিকিৎসক নেই, যুব সমাজের কর্মসংস্থান নেই। প্রচুর বাজেট রয়েছে, কিন্তু সঠিক উন্নয়ন নেই। এই ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রপতির হাত ধরে শেখ হাসিনার কাছে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার বিসর্জন দেওয়া হয়েছিল। সেই ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে কিশোরগঞ্জ থেকেই গণপ্রতিরোধের সূচনা হয়েছিল।”
তরুণদের প্রতি আস্থা রেখে দেশ গড়ার আহ্বান জানিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, “বাংলাদেশে গণঅভ্যুত্থান সম্ভব হয়েছিল তরুণদের নেতৃত্বে। আবারও বলছি, তরুণদের শক্তিকে কাজে না লাগাতে পারলে নতুন বাংলাদেশ গড়া সম্ভব হবে না। সংস্কার, বিচার ও নতুন সংবিধানের দাবিতে আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। স্বৈরাচারের দোসররা এখনও বিভিন্ন জায়গায় সক্রিয়। কিশোরগঞ্জে অনেক মামলার আসামিকে এখনো গ্রেফতার করা হয়নি। শহীদ পরিবার ও আহত যোদ্ধারা আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের হুমকির মুখে রয়েছেন। আমরা জানতে চাই, কারা এই সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দিচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধেও প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।”
এর আগে রাত ৮টায় শহরের পুরাতন স্টেডিয়াম থেকে পদযাত্রা করে পুরানথানা এলাকায় সমাবেশস্থলে যান এনসিপির নেতাকর্মীরা। সমাবেশকে ঘিরে পুরো শহরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়। প্রধান সড়কে সমাবেশ হওয়ায় কয়েক ঘণ্টা আগে থেকেই যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বিভিন্ন এলাকা থেকে মিছিল যোগ হতে থাকে সমাবেশে।
সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ, যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরা শারমীন, যুগ্ম সদস্য সচিব আহনাফ সাঈদ খান, দক্ষিণাঞ্চলের সংগঠক আকরাম হোসেন রাজ এবং উত্তরাঞ্চলের সংগঠক খায়রুল কবির।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সমন্বয়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারি, যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, কিশোরগঞ্জ জেলা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক ইকরাম হোসেন এবং সদস্য সচিব ফয়সাল প্রিন্স।
বাংলাধারা/এসআর