ঢাকা, সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫, ২৩ আষাঢ় ১৪৩২

এআইয়ের ঢেউয়ে মাইক্রোসফটে চাকরি হারাতে পারেন ৯ হাজার কর্মী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

 প্রকাশিত: জুলাই ০৩, ২০২৫, ০২:৪৮ দুপুর  

ছবি: সংগৃহিত

বিশ্বজুড়ে টেক শিল্পের বড় পরিবর্তনের ঢেউয়ের মধ্যেই মাইক্রোসফট ঘোষণা দিয়েছে, তারা তাদের বৈশ্বিক কর্মীবলের প্রায় ৪ শতাংশ কমাতে যাচ্ছে। এর ফলে প্রায় ৯ হাজার কর্মী চাকরি হারাতে পারেন।

মাইক্রোসফটের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তিকে আরও বেশি কার্যকরভাবে কাজে লাগানো এবং কোম্পানির কাঠামোকে আরও দক্ষ ও খরচ-সাশ্রয়ী করতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

মাইক্রোসফটের এক মুখপাত্র এক বিবৃতিতে বলেছেন, “বাজার পরিস্থিতির পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মেলাতে এবং কোম্পানি ও আমাদের টিমগুলোর সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিশ্চিত করতে আমরা প্রয়োজনীয় সাংগঠনিক পরিবর্তন আনছি।”

২০২৪ সালের হিসাব অনুযায়ী, মাইক্রোসফটের বিশ্বজুড়ে কর্মী সংখ্যা প্রায় ২ লাখ ২৮ হাজার। সেই হিসাব ধরেই এই ছাঁটাই প্রক্রিয়া পরিচালিত হচ্ছে।

এর আগে চলতি বছরের মে মাসেও প্রতিষ্ঠানটি প্রায় ৬ হাজার কর্মী ছাঁটাই করেছিল। এবারও মূল লক্ষ্য হচ্ছে, ব্যবস্থাপনার স্তর কমিয়ে আনা এবং এআই প্রযুক্তিকে আরও বেশি পণ্য ও সেবা তৈরির ক্ষেত্রে অন্তর্ভুক্ত করা।

মাইক্রোসফট বলছে, তারা এমন একটি কর্মপরিবেশ গড়ে তুলতে চায়, যেখানে কর্মীরা এআই-এর সহযোগিতায় আরও সৃজনশীল এবং অর্থবহ কাজ করার সুযোগ পাবেন। প্রতিষ্ঠানটির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “আমরা সবসময় আমাদের ব্যবসার কৌশলগত প্রয়োজন অনুযায়ী কর্মীবিন্যাসে পরিবর্তন এনেছি, এমনকি ব্যবসা ভালো চলার সময়েও।”

বিশ্লেষকরা বলছেন, চ্যাটজিপিটি এবং অন্যান্য জেনারেটিভ এআই প্রযুক্তির উত্থানের পর মাইক্রোসফট দ্রুতগতিতে এআই খাতে বিনিয়োগ বাড়িয়েছে। ওপেনএআই-এর সঙ্গে অংশীদারত্বের মাধ্যমে তারা বহু পণ্যে এআই সংযুক্ত করেছে, যার জন্য বিশাল অবকাঠামোগত ব্যয় হয়েছে। সেই ব্যয় সামাল দিতে এবং ভবিষ্যতের বিনিয়োগ টিকিয়ে রাখতে মাইক্রোসফট কর্মীসংখ্যা কমিয়ে ব্যয় নিয়ন্ত্রণের কৌশল নিয়েছে।

ছাঁটাই হওয়া কর্মীদের জন্য মাইক্রোসফট সেভারেন্স প্যাকেজ, স্বাস্থ্যবিমা সুবিধা এবং নতুন কর্মসংস্থান খুঁজতে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সহযোগিতা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

প্রযুক্তি বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মাইক্রোসফটের এই সিদ্ধান্ত কেবল তাদের একক পদক্ষেপ নয়, বরং এটি বিশ্ব প্রযুক্তি খাতে চলমান এক বড় পরিবর্তনেরই অংশ। এআই, অটোমেশন এবং খরচ নিয়ন্ত্রণ- এই তিনটি বড় উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে আজকের টেক জগৎ নতুনভাবে নিজেকে সাজাচ্ছে। গুগল, মেটা এবং অ্যামাজনের মতো টেক জায়ান্টরাও ইতিমধ্যেই একই ধরনের ছাঁটাই ও পুনর্গঠনের পথে এগিয়েছে।


বাংলাধারা/এসআর