সাম্য হত্যার বিচার দাবিতে উত্তাল শাহবাগ, ছাত্রদলের অবরোধে অচল যান চলাচল
প্রকাশিত: মে ১৮, ২০২৫, ০৫:০৩ বিকাল

ছবি: বাংলাধারা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যার বিচারের দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠেছে রাজধানীর শাহবাগ মোড়। রবিবার (১৮ মে) বিকেল ৩টা ৪৫ মিনিটের দিকে ছাত্রদলের বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নিয়ে অবরোধ শুরু করলে পুরো এলাকার যান চলাচল কার্যত অচল হয়ে পড়ে।
'বিচার চাই, বিচার চাই', 'সাম্য হত্যার বিচার চাই', 'উই ওয়ান্ট জাস্টিস'- এমন বিভিন্ন স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে শাহবাগ মোড়। আন্দোলনকারীরা রাস্তায় বসে পড়েন। ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন মেট্রোরেল স্টেশনের সামনে অবস্থান নিয়ে আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
এর আগে দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা ‘প্রকৃত হত্যাকারীদের’ গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শাহবাগ থানা ঘেরাও করেন। মিছিলটি টিএসসি থেকে শুরু হয়ে জাতীয় জাদুঘর অতিক্রম করে থানার সামনে গিয়ে শেষ হয়।
শনিবার ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছিল, হত্যার তদন্তে গাফিলতির প্রতিবাদে এবং মূল হত্যাকারীসহ সব জড়িতদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবিতে রবিবার জাতীয় জাদুঘরের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ হবে। একইসঙ্গে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালনের কথাও জানানো হয়।
গত ১৩ মে, মঙ্গলবার রাতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্তমঞ্চের পাশে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে প্রাণ হারান শাহরিয়ার আলম সাম্য। তিনি স্যার এ এফ রহমান হল শাখা ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। পাশাপাশি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।
হত্যার পরদিন সকালে নিহত সাম্যর বড় ভাই শরীফুল আলম বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় সন্দেহভাজন হিসেবে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরে আদালতের নির্দেশে তাদের ছয় দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তবে ছাত্রদল এবং সাধারণ শিক্ষার্থীরা দাবি করছেন, এরা ‘মূল হত্যাকারী’ নয়, প্রকৃত হত্যাকারীদের চিহ্নিত করে দ্রুত গ্রেপ্তার করতে হবে।
শুধু বিচারের দাবিই নয়, আন্দোলনকারীরা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। সাম্য হত্যার ঘটনার পর সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যেও উদ্বেগ ও ক্ষোভ বিরাজ করছে।
একজন শিক্ষার্থী বলেন, “প্রতিদিন এই শহরে আমাদের চলাচল করতে হয় ভয় নিয়ে। সাম্যের মৃত্যু চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে, আমরা কেউ নিরাপদ নই।”
তদন্তে ধীরগতি এবং প্রকৃত হত্যাকারী এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকায় পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন আন্দোলনকারীরা। অনেকের অভিযোগ, মামলাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে এবং বিষয়টি রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত হচ্ছে।
বাংলাধারা/এসআর