ঢাকা, শুক্রবার, ০১ আগস্ট ২০২৫, ১৭ শ্রাবণ ১৪৩২

সদরঘাটে ঈদের আমেজ, ঘরমুখো মানুষের স্রোত

বাংলাধারা রিপোর্ট:

 প্রকাশিত: জুন ০৪, ২০২৫, ১১:৪১ রাত  

ছবি: বাংলাধারা

সদরঘাট যেন এখন ঈদের রঙে রঙিন। প্রিয়জনের সান্নিধ্যে ঈদ কাটাতে রাজধানীবাসীর ঢল নেমেছে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে। সকাল থেকেই মানুষের ভিড়ে সরগরম দেশের বৃহত্তম এই নদীবন্দর। হাঁকডাক, কুলিদের চিৎকার আর যাত্রীদের ব্যস্ত পদচারণায় জমজমাট ঈদযাত্রার আয়োজন।

বৃহস্পতিবার (৫ জুন) থেকে শুরু হচ্ছে টানা ১০ দিনের ঈদের ছুটি। এর আগের দিন, বুধবার, ছিল সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের শেষ কর্মদিবস। অফিস শেষে বিকেল গড়াতেই অনেকে ভিড় জমিয়েছেন সদরঘাটে। নদীপথে দক্ষিণাঞ্চলের বাড়ি ফেরার এই প্রাণচঞ্চল দৃশ্য এক অনন্য আবহ তৈরি করেছে।

ঘাটের পন্টুন থেকে শুরু করে লঞ্চের প্রতিটি তলা পর্যন্ত উপচে পড়ছে যাত্রী। অনেকেই পরিবার-পরিজন নিয়ে ফিরছেন গ্রামে। যাত্রীদের মুখে সন্তোষ- ব্যবস্থাপনা আগের চেয়ে অনেক উন্নত। কেউ কেউ বলছেন, এবার ঈদের ছুটিও বেশি, তাই আনন্দটা যেন দ্বিগুণ।

ঘরমুখো মানুষের নিরাপদ যাত্রা নিশ্চিত করতে কঠোর অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। পুলিশের পাশাপাশি আনসার ও সেনাবাহিনীর সদস্যরাও টার্মিনালের নিরাপত্তায় নিয়োজিত। সদরঘাট জুড়ে স্থাপন করা হয়েছে অসংখ্য সিসিটিভি ক্যামেরা, আর নিয়মিত টহল চলছে প্রতিটি পন্টুন ও প্রবেশপথে।

সদরঘাট পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক মো. লিটন জানান, "যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য। এ পর্যন্ত কোনো চুরি বা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেনি। আমরা সতর্ক আছি, যেন সবাই নির্বিঘ্নে বাড়ি ফিরতে পারে।"

সদরঘাট ইজারাদার মোহাম্মদ সুমন ভূঁইয়া জানান, “যাত্রীরা যাতে কোনো ভোগান্তিতে না পড়েন, সেজন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবীরা সার্বক্ষণিক কাজ করছেন। কুলিদের বাড়াবাড়িও নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়েছে।”

এদিকে, যাত্রীদের চাপ সামাল দিতে বাড়তি লঞ্চ নামানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন সদরঘাট লঞ্চ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. সালাম। তিনি বলেন, “ঈদ উপলক্ষে ভাড়া বাড়ানো হয়নি। যাত্রীদের বাড়তি চাপ সামলাতে আমরা ৬০টির মতো অতিরিক্ত লঞ্চ নামিয়েছি। প্রয়োজন হলে আরও লঞ্চ প্রস্তুত আছে।”

ঘাটে কথা হয় যাত্রী মাহবুবুর রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, “সারাবছর অপেক্ষায় থাকি এই ঈদের জন্য। এবার লম্বা ছুটি পেয়েছি, তাই স্ত্রী-সন্তান নিয়ে গ্রামে যাচ্ছি। সদরঘাটের নিরাপত্তা দেখে বেশ ভালো লাগছে।”

তার মতো অনেকেই সদরঘাটে এসে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছেন। কেউ কাঁধে ব্যাগ, কেউ বাচ্চা কোলে- সবাই ব্যস্ত বাড়ি ফেরার তাগিদে। নদীপথে ঈদযাত্রা শুধু প্রয়োজন নয়, অনেকের কাছে আবেগের নাম।


বাংলাধারা/এসআর