জুলাই সনদের ভিত্তিতেই আগামী নির্বাচন দাবি এনসিপির আহ্বায়কের
প্রকাশিত: আগস্ট ০২, ২০২৫, ০৯:৫৪ রাত

ছবি: সংগৃহিত
আগামী ৫ আগস্টের মধ্যে সরকার থেকে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ প্রকাশের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তবে শুধু ঘোষণাপত্র নয়, একই সময়ের মধ্যে ‘জুলাই সনদ’ প্রণয়ন ও কার্যকর করার দাবি জানান তিনি। নাহিদ বলেন, ঘোষণাপত্র সংবিধানের প্রস্তাবনা ও তপশিলে যুক্ত করে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিতে হবে। পাশাপাশি জুলাই সনদের বাস্তবায়ন পদ্ধতি চূড়ান্ত করে রাজনৈতিক দলগুলোর সম্মিলিত স্বাক্ষর সুনিশ্চিত করতে হবে। এই সনদের আইনি ভিত্তি থাকতে হবে এবং এর ভিত্তিতেই আগামী জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। বর্তমান সরকারের মেয়াদে এই সনদ কার্যকর হওয়াও জরুরি বলে মন্তব্য করেন তিনি।
শনিবার (২ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির অস্থায়ী কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। সেখানে তিনি আরও বলেন, জুলাই পদযাত্রার সময় আমরা গণহত্যার বিচার, কাঠামোগত সংস্কার এবং নতুন সংবিধানের দাবি জানিয়েছিলাম। তখনই আমরা জুলাই ঘোষণাপত্র এবং সনদের প্রস্তাব রেখেছিলাম। সরকারের পক্ষ থেকে জানা গেছে, আগামী ৫ আগস্ট সব পক্ষের অংশগ্রহণে সরকার জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশ করবে। আমরা চাই, একই সময়ের মধ্যে জুলাই সনদ নিয়েও সমাধানে পৌঁছানো হোক। যদিও ঐক্যমত্য কমিশন এখনো ‘নোট অব ডিসেন্ট’ বা ভিন্নমত সংক্রান্ত বিষয়ের কোনো সমাধান জানায়নি।
তিনি জানান, গত বছরের ৩ আগস্ট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সরকার পতনের দাবিতে এক দফা ঘোষণা করা হয়েছিল। সেই ঘোষণার এক বছর পূর্তি উপলক্ষে আগামীকাল রোববার শহীদ মিনারে সমাবেশের মাধ্যমে “জুলাই পদযাত্রা” শেষ হবে। এই সমাবেশে এনসিপির পক্ষ থেকে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের রূপরেখা ও কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। বিকেল ৪টায় এই সমাবেশ শুরু হবে। এতে অংশ নিতে এনসিপির সব নেতাকর্মী এবং সাধারণ মানুষকে আহ্বান জানান তিনি।
সমাবেশ ঘিরে ঢাকায় যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, এইচএসসি পরীক্ষা ও ছাত্রদলের সমাবেশের কারণে একই এলাকায় বড় দুটি কর্মসূচি হচ্ছে। ছাত্রদলকে স্থান পরিবর্তনের জন্য ধন্যবাদ জানান তিনি। পাশাপাশি ঢাকাবাসী ও পরীক্ষার্থীদের ভোগান্তির জন্য আগাম দুঃখ প্রকাশ করেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যে গণতান্ত্রিক পরিবর্তনের আশা তৈরি হয়েছিল, তা এখনো পূর্ণতা পায়নি। জুলাই সনদের মাধ্যমে সেই আকাঙ্ক্ষা আংশিক পূরণ হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। রাজনৈতিক সংস্কার য zwar শুরু হয়েছে, কিন্তু অর্থনৈতিক সংস্কার, কর্মসংস্থান ও জীবনমানের উন্নয়নে এখনো অনেক কাজ বাকি আছে। এসব সম্ভাবনাকে বাস্তবায়নে এনসিপি কাজ করে যাচ্ছে এবং আগামী সমাবেশে সেসব বিষয় উঠে আসবে।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কেউ যদি এনসিপি, বৈষম্যবিরোধী প্ল্যাটফর্ম বা ‘জুলাই’-এর নাম ভাঙিয়ে দুর্নীতিতে জড়ায়, তাহলে প্রশাসনকে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। এনসিপিও দলীয়ভাবে এসব অনুপ্রবেশকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে যাতে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ না হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদিব, সামান্তা শারমিন এবং মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদ।
এদিকে, ৩ আগস্টের সমাবেশ ঘিরে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে প্রস্তুতি ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। মূল সমাবেশ হওয়ার কথা ছিল বিকেল ৩টায়, তবে এইচএসসি পরীক্ষার কারণে সময় এক ঘণ্টা পিছিয়ে বিকেল ৪টা নির্ধারণ করা হয়েছে। এনসিপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সারা দেশ থেকে প্রায় এক লাখ মানুষ এই সমাবেশে অংশ নেবে বলে আশা করা হচ্ছে। আশপাশের জেলা থেকে আগতদের জন্য পরিবহন ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে।
বাংলাধারা/এসআর