ঢাকা, সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

গ্রিভসের দ্বিশতক-হোপের সেঞ্চুরিতে অসম্ভব ড্র লিখল ওয়েস্ট ইন্ডিজ

স্পোর্টস্ ডেস্ক

 প্রকাশিত: ডিসেম্বর ০৬, ২০২৫, ১২:৩৮ দুপুর  

ছবি: সংগৃহিত

অ্যাশেজের উত্তাপে ক্রিকেট বিশ্ব যখন ব্যস্ত, ঠিক তখনই ক্রাইস্টচার্চে অনুষ্ঠিত নিউজিল্যান্ড-ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথম টেস্ট নিঃশব্দেই পরিণত হলো টেস্ট ক্রিকেটের অসাধারণ এক বিজ্ঞাপনে। প্রথম ইনিংসে মাত্র ১৬৭ রানে গুটিয়ে যাওয়া ক্যারিবীয়রা যে দ্বিতীয় ইনিংসে ৫৩১ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দুই দিন ধরে লড়ে ম্যাচ ড্র করে ফেলবে- এমনটা কেউ ভাবতেও পারেনি। কিন্তু শাই হোপ, জাস্টিন গ্রিভস আর কেমার রোচ মিলে অসম্ভবকে প্রায় সম্ভব করেই দেখালেন।

দ্বিতীয় ইনিংসে ৬ উইকেটে ৪৫৭ রানে থেমেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ- যা টেস্ট ইতিহাসে দ্বিতীয় ইনিংসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্কোর। শাই হোপের ১৪০ রানের লড়াকু ইনিংসের পর আসল মহাকাব্য লিখেছেন জাস্টিন গ্রিভস। ৩৮৮ বল খেলে অপরাজিত ২০২ রানের ইনিংস- ধৈর্য, দৃঢ়তা আর আত্মবিশ্বাসের এক অনন্য মিশ্রণ। শেষ দিকে তাকে অবিশ্বাস্য সঙ্গ দিয়েছেন টেল এন্ডার কেমার রোচ- ২৩৩ বল খেলেছেন, করেছেন মাত্র ৫৩ রান, কিন্তু প্রতিটি বল ছিল ম্যাচ বাঁচানোর লড়াই।

নিউজিল্যান্ডের নিশ্চিত জয় হাতছাড়া হয় পঞ্চম দিনের শেষ ঘণ্টায়। জয় থেকে ১০০ রানেরও কম দূরে ছিল ক্যারিবীয়রা, তবে সময়ই বাধা হয়ে দাঁড়াল। তবুও ক্যারিবীয় ডাগআউটের উচ্ছ্বাস দেখে বোঝার উপায় ছিল না যে ম্যাচটি ড্র হয়েছে- তাদের কাছে এটি ছিল জয়ের সমানই আনন্দের।

এর আগে ম্যাচের শুরুতে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করে নিউজিল্যান্ড তোলে মাত্র ২৩১ রান। ওয়েস্ট ইন্ডিজ আরও বাজে অবস্থায় পড়ে অলআউট হয় ১৬৭ রানে। দ্বিতীয় ইনিংসে টম লাথামের ১৪৫ ও রাচিন রবীন্দ্রর ১৭৬ রানে ভর করে কিউইরা ৮ উইকেটে ৪৬৬ রান তুলে দেয় ৫৩১ রানের বিশাল লক্ষ্য।

টার্গেট তাড়ায় নেমেই ধসে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ৭২ রানে চার উইকেট পড়ে ব্যাটিং লাইনে আতঙ্ক ছড়িয়ে যায়—জন ক্যাম্পবেল ১৫, চন্দরপল ৬, আথানাজে ৫, আর অধিনায়ক রোস্টন চেজ করেন মাত্র ৪ রান। তখনই শাই হোপ ও জাস্টিন গ্রিভস দাঁড়িয়ে দলকে উদ্ধার করেন। তাদের শতরানের জুটি ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ফিরিয়ে আনে ম্যাচে। পঞ্চম দিনে হোপ আউট হলেও গ্রিভস লড়াই থামাননি। শেষ সেশন পর্যন্ত তাকে চমৎকার সঙ্গ দেন রোচ।

এই ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের হয়ে জ্যাকব ডাফি নেন সর্বোচ্চ ৩ উইকেট। তবে সব পরিসংখ্যান শেষে গল্পটা একটাই- টেস্ট ক্রিকেটের আসল সৌন্দর্য কী, তা ক্রাইস্টচার্চের এই ম্যাচ আবারও মনে করিয়ে দিল।

 

বাংলাধারা/এসআর