কারামুক্ত হয়ে আবেগঘন বার্তায় যা বললেন নুসরাত ফারিয়া
প্রকাশিত: মে ২০, ২০২৫, ০৬:৩৮ বিকাল

ফাইল ছবি
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় রাজধানীর ভাটারা থানায় দায়ের করা এক হত্যাচেষ্টা মামলায় গ্রেফতার হওয়া ঢাকাই চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় নায়িকা নুসরাত ফারিয়া জামিনে মুক্তি পেয়েছেন।
মঙ্গলবার (২০ মে) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাফিজুর রহমানের আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন। এর আগে দুইদিন কারাভোগের পর বিকেলে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্ত হন অভিনেত্রী।
কারামুক্ত হয়ে বিকেলেই নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি আবেগঘন পোস্ট দেন ফারিয়া। সেখানে তিনি জানান, এই কয়েকদিন তার জীবনের সবচেয়ে কঠিন সময় পার করেছেন।
তিনি লেখেন, জীবনের সবচেয়ে মুমূর্ষু সময় পার করেছি এ দুইটা দিন। মানসিকভাবে খুব ভেঙে পড়েছিলাম। কিন্তু যারা এই দুঃসময়ে আমার পাশে ছিলেন, তাদের প্রতি আমি হৃদয়ের গভীর থেকে কৃতজ্ঞ। সহকর্মী, ইন্ডাস্ট্রির সবাই এবং অসংখ্য সাধারণ মানুষ- আপনাদের এই ভালোবাসা আমি কখনো ভুলব না।
গণমাধ্যমের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে ফারিয়া বলেন, বিশেষ করে আমাদের সাংবাদিক ভাই-বোনদের অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই। এ সময় আপনাদের সাপোর্ট আমার খুব দরকার ছিল। আমি সবসময় মনে রাখব, আপনারা আমার পাশে ছিলেন।
রোববার (১৮ মে) দুপুরে ব্যক্তিগত সফরে থাইল্যান্ড যাওয়ার সময় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে নুসরাত ফারিয়াকে আটক করে ইমিগ্রেশন পুলিশ। পরে তাকে ভাটারা থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
পরদিন সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় ঢাকা মহানগর হাকিম সারাহ ফারজানা হকের আদালতে তোলা হয় নুসরাত ফারিয়াকে। সেখানে উভয়পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। আদালতে শুনানির সময় কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে ছিলেন ফারিয়া। তাকে একাধিকবার চোখ মুছতে দেখা যায়।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ওমর ফারুক ফারুকী শুনানিতে দাবি করেন, নুসরাত ফারিয়া একজন ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর। তিনি একটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে ষড়যন্ত্রে জড়িত।
তবে ফারিয়ার আইনজীবীরা অভিযোগ অস্বীকার করে তাকে ‘সম্পূর্ণ নির্দোষ’ দাবি করে জামিন প্রার্থনা করেন।
গত ২৮ এপ্রিল ঢাকার ভাটারা এলাকায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় সংঘটিত সহিংস ঘটনার পরপরই আদালতের নির্দেশে একটি হত্যাচেষ্টা মামলা রুজু হয়। পরদিন (২৯ এপ্রিল) মামলাটি নথিভুক্ত করে ভাটারা থানা।
এ মামলায় ঢাকাই চলচ্চিত্রের ১৭ জন পরিচিত অভিনয়শিল্পীকে আসামি করা হয়, যাদের মধ্যে আছেন নুসরাত ফারিয়া, অপু বিশ্বাস, নিপুণ আক্তার, আশনা হাবিব ভাবনা, জায়েদ খান প্রমুখ। অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, এরা সবাই আন্দোলনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের পৃষ্ঠপোষকতায় কাজ করেছেন এবং অর্থায়ন করেছেন।
নুসরাত ফারিয়াকে এ মামলায় অন্যতম মুখ্য আসামি হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
জামিন পেলেও মামলার তদন্ত এখনো চলমান। আগামী ২২ মে আবারো জামিন শুনানির দিন ধার্য রয়েছে। তবে কারামুক্তির পর দেওয়া ফারিয়ার পোস্টে তার ভেতরের আত্মবিশ্বাস এবং মানুষের প্রতি ভালোবাসা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
তার বক্তব্যের একাংশে তিনি লেখেন, আপনাদের ভালোবাসা না পেলে এত দ্রুত ফিরতে পারতাম না। সত্যের জয় হবেই। আমি বিশ্বাস করি, ন্যায়বিচার একদিন হবেই।
বাংলাধারা/এসআর