বাংলা সিনেমাকে ধ্বংস করতে একটি কুচক্রী মহল সক্রিয়: শাকিব খান
প্রকাশিত: জুন ২৩, ২০২৫, ১২:০২ দুপুর

ফাইল ছবি
এবারের ঈদে মুক্তিপ্রাপ্ত শাকিব খান অভিনীত চলচ্চিত্র ‘তাণ্ডব’ ইতোমধ্যে দেশজুড়ে দর্শকদের মধ্যে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। মেগাস্টার শাকিব খানের অনবদ্য অভিনয় আর চিত্রনাট্যের গতি মিলিয়ে সিনেমাটি সিনেমাপ্রেমীদের কাছে হয়ে উঠেছে ঈদের অন্যতম আকর্ষণ। মুক্তির পর থেকেই সিনেমাটি নিয়ে চলছে আলোচনা, প্রশংসা, সমালোচনা- সবকিছু মিলিয়ে এক বিরাট আগ্রহ।
তবে এ জোয়ারে হঠাৎ ছন্দপতন ঘটায় পাইরেসির হানা। সিনেমা মুক্তির মাত্র কয়েকদিনের মধ্যেই অনলাইনে ছড়িয়ে পড়ে এর অবৈধ কপি। বিষয়টি নিয়ে সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে মুখ খুলেছেন শাকিব খান। পাইরেসির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়ে তিনি বলেন, ‘পাইরেসি সত্ত্বেও "তাণ্ডব"-এর প্রতি মানুষের আগ্রহ কমেনি, বরং বেড়েছে।'
শাকিব খান স্পষ্ট ভাষায় অভিযোগ করেন, একটি কুচক্রী মহল দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের সিনেমা ইন্ডাস্ট্রিকে ধ্বংসের পাঁয়তারা করছে। তার কথায়, ‘এই বাজে মহলটা চায়, আমাদের সিনেমা যেন না চলে, যেন দর্শকহীন হয়, যেন আমরা আর ভালো সিনেমা বানাতে না পারি। কিন্তু বাস্তবে আমরা দেখছি, পাইরেসির পরেও দর্শকদের আগ্রহ আগের চেয়ে দ্বিগুণ হয়েছে। তাণ্ডব গুলশান থেকে গুলিস্তান- সর্বত্র মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যখনই কিছু ভালো করতে যাই, তখনই এরা পিছন থেকে আঘাত করে। "বরবাদ"-এর সময় আমরা পাইরেসির শিকার হয়েছি, এবার "তাণ্ডব"-এর ক্ষেত্রেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে। এত তাড়াতাড়ি পাইরেসি হওয়ার ঘটনা কখনও ঘটেনি।’
শাকিব খান মনে করেন, পাইরেসি শুধু একটি সিনেমাকে নয়, গোটা শিল্পকে ধ্বংস করে দেয়। তাই এর বিরুদ্ধে সবাইকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বাংলা সিনেমা আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতির প্রতিচ্ছবি। এটি রক্ষা করা আমাদের সকলের দায়িত্ব। আমাদের প্রত্যেক দর্শক, শিল্পী, নির্মাতা ও সংশ্লিষ্ট সকলকে এখনই একজোট হয়ে পাইরেসির বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই দেশে সিনেমা শুধু বিনোদনের মাধ্যম নয়, এটি সংস্কৃতির বাহক। যারা পাইরেসিতে জড়িত, তারা শুধু আইন ভাঙছে না, তারা আমাদের সংস্কৃতিরও ক্ষতি করছে। তাই এখনই সময়, আমরা সবাই মিলে পাইরেসি রুখে দাঁড়াই।’
বাংলা সিনেমার প্রতি দেশের দর্শকদের ভালোবাসা ও সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়ে শাকিব বলেন, ‘যখন দেখি দর্শক হলে ভিড় করছেন, প্রশংসা করছেন, তখন মনে হয়- আমরা জয়ী। এই জয় শুধু আমার একার নয়, এটি বাংলা সিনেমার জয়, আমাদের সবার জয়।’
শাকিব খান বলেন, ‘যে জাতি তার সংস্কৃতিকে এগিয়ে নেয়, সেই জাতিই প্রকৃত অর্থে উন্নত হয়ে উঠে। আজ আমরা দেখছি বাংলা সিনেমা শুধু দেশের মধ্যে নয়, আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও জায়গা করে নিচ্ছে। এই অগ্রযাত্রায় যারা বাধা দিতে চায়, তারা কোনোভাবেই দেশপ্রেমিক হতে পারে না।’
বাংলা সিনেমা নিয়ে এখন এক নতুন জাগরণ তৈরি হয়েছে। ‘তাণ্ডব’ যেমন তার প্রমাণ, তেমনি পাইরেসির ঘটনাও দেখিয়ে দিল- এ শিল্পকে এখনো নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। তবে শাকিব খানের মত সুপারস্টারদের সরব ভূমিকা, দর্শকদের সমর্থন এবং আইনি কাঠামোর সঠিক প্রয়োগ- এই তিনেই নিহিত রয়েছে সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির প্রকৃত রক্ষা ও অগ্রগতি।
বাংলাধারা/এসআর