বৃষ্টি-অবরোধে অচল ঢাকা, দুর্ভোগে নগরবাসী
প্রকাশিত: মে ২২, ২০২৫, ০৭:০৩ বিকাল
_20250522190336_original_30.webp)
ছবি: সংগৃহিত
টানা আধাঘণ্টার প্রবল বৃষ্টি আর রাজনৈতিক অবরোধ- এই দুইয়ের যুগপৎ আঘাতে রাজধানী ঢাকার সড়কপথ কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। শহরের গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র যানজট। জলাবদ্ধতা আর অবরোধে পড়ে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে অফিসগামী মানুষ, রোগী বহনকারী অ্যাম্বুলেন্স এবং শিক্ষার্থীদের।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) সকাল ১০টার পর থেকেই পরিস্থিতির অবনতি শুরু হয়।
সকাল সাড়ে ১০টা থেকে শুরু হওয়া ভারী বর্ষণে নিউমার্কেট, সায়েন্সল্যাব, ধানমন্ডি, বাটা সিগন্যাল, পান্থপথসহ বিভিন্ন এলাকায় সড়কে জমে যায় হাঁটুসমান পানি। বাটা সিগন্যাল এলাকায় আটকে থাকা সমকাল সাংবাদিক ওবায়দুর রহমান জানান, “বৃষ্টির পানি আশপাশের বিপণিবিতানেও ঢুকে পড়েছে। বাসগুলো যাত্রী নামিয়ে দিয়ে চলে যাচ্ছে, কেউই গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছে না।”
নিউমার্কেট থেকে মতিঝিলগামী একটি বাসের চালক বলেন, “একই জায়গায় এক ঘণ্টা দাঁড়িয়ে আছি। যদি এভাবে চলে, আজ সারাদিনেও মতিঝিলে পৌঁছানো সম্ভব হবে না।”
বৃষ্টির পাশাপাশি শহরের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়জুড়ে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠন ছাত্রদলের অবস্থান কর্মসূচিও যানজট বাড়িয়ে দিয়েছে।
বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র হিসেবে অবিলম্বে শপথ গ্রহণের দাবিতে নগর ভবন, হাইকোর্ট মোড়, মৎস্য ভবন ও কাকরাইল মোড়ে সকাল ১০টা থেকে অবস্থান নেয় তার সমর্থকরা।
একই সময়ে শাহবাগ মোড় ও হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে অবস্থান নেয় জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। সংগঠনটির দাবি, ছাত্রনেতা সাম্যর হত্যাকাণ্ডের বিচার নিয়ে সরকার দীর্ঘসূত্রিতা করছে, যার প্রতিবাদে তারা এ কর্মসূচি পালন করছে।
ফলে শাহবাগ, কাকরাইল ও মৎস্য ভবন এলাকায় যান চলাচল প্রায় থমকে যায়।
ট্রাফিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জনপ্রিয় মাধ্যম ‘ট্রাফিক অ্যালার্ট ঢাকা’ ও গুগল ম্যাপ সূত্রে জানা যায়, রাজধানীর যানজট এখন মগবাজার, কারওয়ান বাজার, মহাখালী, এয়ারপোর্ট রোড, খিলগাঁও, মালিবাগ, রামপুরা, হাতিরঝিলসহ বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে।
আজিমপুরের বাসিন্দা হাসান নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, “ব্যবসার কাজে মতিঝিল যেতে হচ্ছিল। ভেবেছিলাম মোটরসাইকেলে দ্রুত চলে যেতে পারব, কিন্তু মৎস্য ভবন এলাকায় আধা ঘণ্টা ধরে দাঁড়িয়ে আছি। এক ইঞ্চিও এগোতে পারিনি।”
প্রতিবার বৃষ্টি হলেই ঢাকার সড়কে জলাবদ্ধতা ও যানজট নতুন কিছু নয়। তবে এর সঙ্গে রাজনৈতিক কর্মসূচি যুক্ত হলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে ওঠে।
সাধারণ মানুষের প্রশ্ন, রাজধানীর নাজুক জলাবদ্ধতা পরিস্থিতির সমাধানে কতদূর এগিয়েছে কর্তৃপক্ষের কার্যক্রম? আর রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে জনদুর্ভোগ কতটা ন্যায়সঙ্গত?
পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে আরও সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন ট্রাফিক বিভাগ সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা।
একের পর এক দুর্যোগে নাকাল শহরবাসী এখন চায় কার্যকর সমাধান—পরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা, দায়িত্বশীল রাজনৈতিক আচরণ এবং জরুরি ভিত্তিতে যানজট নিরসনে সমন্বিত পদক্ষেপ।
বাংলাধারা/এসআর