ঢাকা, শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ১ কার্তিক ১৪৩২

প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো শারদীয় দুর্গোৎসব

নিজস্ব প্রতিবেদক

 প্রকাশিত: অক্টোবর ০২, ২০২৫, ০৭:২১ বিকাল  

ছবি: সংগৃহিত

রঙিন আয়োজন, ঢাক-ঢোল আর উলুধ্বনির মাতোয়ারা পরিবেশে শেষ হলো হিন্দু সম্প্রদায়ের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) সকালে ভোর থেকেই রাজধানীসহ সারাদেশের পূজামণ্ডপগুলোতে ভক্তদের ছিল উপচেপড়া ভিড়। দেবীর চরণে অঞ্জলি দিয়ে তারা বিজয়ার প্রার্থনা করেন।

দশমীর আচার শেষে প্রতিমা নিয়ে শোভাযাত্রা বের হয়। ঢোল-ঢাক, শঙ্খধ্বনি ও ভক্তদের উল্লাসে মুখর ছিল বিসর্জনস্থলগামী পথঘাট।

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস- বিজয়া দশমী মানে শুধু প্রতিমা বিসর্জন নয়; মনের ভেতরের আসুরিক প্রবৃত্তি, কাম, ক্রোধ, হিংসা, লালসা বিসর্জন দিয়ে সত্য, সুন্দর ও শান্তিকে ধারণ করার দিন। এই উপলক্ষে ভক্তরা ভ্রাতৃত্ব, সৌহার্দ্য ও শান্তি প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার করেন।

এর আগে সকালে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন পূজামণ্ডপে অনুষ্ঠিত হয় দশমী বিহিত পূজা। নারী ভক্তরা দেবীর চরণে সিঁদুর নিবেদন করেন এবং পরস্পরের কপালে সিঁদুর পরিয়ে দেন। বিবাহিত নারীরা দেবীর চরণ স্পর্শ করা সিঁদুর কৌটায় রেখে সারা বছর ব্যবহার করেন। সিঁদুর খেলার এই আনন্দঘন মুহূর্তে মণ্ডপগুলো হয়ে ওঠে উচ্ছ্বাস ও আবেগে ভরা।

সিঁদুর খেলার পর ভক্তরা দেবীর কাছে পরিবার ও সমাজের মঙ্গল কামনা করেন। তবে আনন্দঘন মুহূর্তের ভেতরেও ছিল আবেগঘন বিদায়ের প্রস্তুতি। সারা দিন ধরে চলেছে দেবীর চরণে প্রণাম ও বিদায় জানানোর আনুষ্ঠানিকতা।

রাজধানীর ১০টি ঘাটে বিসর্জন হচ্ছে মোট ২৫৪টি পূজামণ্ডপের প্রতিমা। নির্বিঘ্ন বিসর্জন নিশ্চিত করতে সেনাবাহিনী, পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবির প্রায় সাত হাজার সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। নৌ দুর্ঘটনা এড়াতে টহলে রয়েছে নৌ পুলিশ ও কোস্ট গার্ড।

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ জানিয়েছে, গত বছরের তুলনায় এবারের দুর্গোৎসব আরও বেশি শান্তিপূর্ণ ও আনন্দঘন পরিবেশে সম্পন্ন হয়েছে।

শাস্ত্রীয় মতে, এ বছর দেবী দুর্গা হাতির পিঠে মর্ত্যে এসেছেন, আর কৈলাসে ফিরবেন দোলায় চড়ে। বিশ্বাস করা হয়, হাতির পিঠে আগমন অত্যন্ত শুভ লক্ষণ- যা পৃথিবীকে করে শস্য-শ্যামলা ও সমৃদ্ধ।

বাংলাধারা/এসআর