ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫, ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ঘনিষ্ঠ দৃশ্যে আপত্তিকর আচরণ, তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা জানালেন সুস্মিতা সেন

বিনোদন ডেস্ক:

 প্রকাশিত: মে ২২, ২০২৫, ০৮:১৯ সকাল  

ফাইল ছবি

সুন্দরী প্রতিযোগিতার মঞ্চে ভারতের প্রথম মিস ইউনিভার্স হিসেবে ইতিহাস গড়েছিলেন ১৯৯৪ সালে। এরপর বলিউডের গ্ল্যামার জগতে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন প্রতিভা, ব্যক্তিত্ব ও সৌন্দর্যে। সেই সুস্মিতা সেন—আজও যিনি লাখো ভক্তের অনুপ্রেরণা- সম্প্রতি প্রকাশ করলেন তার অভিনয়জীবনের এক নির্মম অভিজ্ঞতার কথা।

ভারতের এক শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সুস্মিতা জানিয়েছেন, ২০০৬ সালে একটি ছবির শুটিং চলাকালে ঘনিষ্ঠ দৃশ্যের অভিনয়ের সময় সহঅভিনেতার হাতে তিনি যৌন হেনস্তার শিকার হন। দৃশ্যটি ছিল স্ক্রিপ্ট অনুযায়ী, কিন্তু সহঅভিনেতা আচমকা নিজের সীমা অতিক্রম করেন। শুটিংয়ের সময়ের কথা মনে করে আজও কেঁপে ওঠেন অভিনেত্রী।

“সেই মুহূর্তে ওর আচরণ ছিল সম্পূর্ণ অনিয়ন্ত্রিত,” বলেন সুস্মিতা। “শুটিং সেটে ক্যামেরা চলছে, অথচ ও যেন ভুলেই গিয়েছিল যে এটা একটি অভিনয়। এমনভাবে আমাকে স্পর্শ করছিল, যা একদমই পেশাদার নয়, বরং ছিল স্পষ্টতই আপত্তিকর।”

এই ঘটনায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন তিনি। শট শেষ হওয়ার আগেই কান্নায় ভেঙে পড়ে সোজা সেট থেকে বেরিয়ে যান তিনি। ঘটনার পরপরই পরিচালককে পুরো বিষয়টি জানান সুস্মিতা।

পরিচালক প্রথমে বিষয়টিকে 'ভুল বোঝাবুঝি' বলে ব্যাখ্যা করেন। সুস্মিতাকে বোঝান, হয়তো সহঅভিনেতার এমন আচরণ অনিচ্ছাকৃত ছিল এবং বিষয়টি মিটমাট করে নেওয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু অভিনেত্রীর মতে, এমন ঘটনা কোনো ‘মিসআন্ডারস্ট্যান্ডিং’ হতে পারে না।

“আমার শরীর, আমার সম্মান- এর ওপর আপোষের কোনো জায়গা নেই,” বলেন তিনি।

ঘটনাটি এখানেই শেষ নয়। ওই ছবিতে আরেকজন অভিনেতার সঙ্গে একটি চুম্বনদৃশ্য ছিল সুস্মিতার। ছবির প্রচারে গিয়ে সেই অভিনেতা দাবি করেন, “এই একটি দৃশ্যের জন্য আমাদের ৩৬টি টেক দিতে হয়েছে।” এমন বক্তব্যে ক্ষুব্ধ হন সুস্মিতা। তিনি বলেন, “এই ধরনের মন্তব্য শুধু অনৈতিকই নয়, বরং একজন অভিনেত্রীর ব্যক্তিগত পরিসরে প্রবেশ করার স্পষ্ট চেষ্টা।”

একদিকে সহঅভিনেতার অনভিপ্রেত আচরণ, অন্যদিকে আরেকজনের অনভিপ্রেত মন্তব্য- সব মিলিয়ে ছবির অভিজ্ঞতা হয়ে উঠেছিল তার জন্য অত্যন্ত কষ্টদায়ক।

তবে দীর্ঘ সময় পর এই অভিজ্ঞতা প্রকাশ করার কারণ হিসেবে সুস্মিতা বলেন, “আমি কাউকে হেয় করতে চাই না। কিন্তু সত্যটা জানানো দরকার, যেন ভবিষ্যতে কেউ একই পরিস্থিতির শিকার না হয়।”

বলিউডের মতো বৃহৎ ইন্ডাস্ট্রিতে আজও নারীদের নিরাপত্তা, সম্মান এবং মর্যাদার প্রশ্নে বহু অনুচ্চারিত ঘটনা আছে। সুস্মিতার এই প্রকাশ একজন শিল্পী হিসেবে তার সাহসিকতা এবং সততার পরিচয় দেয়। তার অভিজ্ঞতা শুধু ব্যক্তি সুস্মিতার নয়- এটা বহু নারীর বাস্তবতা, যাদের কণ্ঠ আজও চাপা পড়ে আছে শোরগোলের আড়ালে।

 

বাংলাধারা/এসআর