‘হেরা ফেরি থ্রি’তে বাবু ভাইয়া নেই? পরেশ রাওয়ালের প্রস্থানে হতবাক সুনীল শেঠি!
প্রকাশিত: মে ২৩, ২০২৫, ১১:১৫ রাত

ছবি: সংগৃহিত
দুই দশকের স্মৃতি ও হাসির জলধারা বইয়ে আনা ‘হেরা ফেরি’ সিরিজের তৃতীয় পর্ব যখন প্রস্তুতির পথে, ঠিক তখনই বড় ধাক্কা। বর্ষীয়ান অভিনেতা পরেশ রাওয়াল থাকছেন না সিনেমায়- এমন খবরে তোলপাড় বলিউড অঙ্গন। আর এই খবর প্রথম পেয়েছিলেন আর কেউ নন, সুনীল শেঠি, সেটাও নিজের দুই সন্তান- আথিয়া ও আহান শেঠির কাছ থেকে!
২০০০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত প্রিয়দর্শন পরিচালিত ‘হেরা ফেরি’ যখন তুমুল জনপ্রিয়তা পায়, তখন দর্শকের মনে গেঁথে যায় বাবুরাও গনপতরাও আপ্টের চরিত্র। ২০০৬ সালে ‘ফির হেরা ফেরি’-তেও সেই ছাপ আরও গভীর হয়। ত্রয়ী রাজু, শ্যাম ও বাবুরাও- তাদের অদ্ভুত কিন্তু দারুণ রসায়নই হয়ে উঠেছিল সিরিজটির মূল শক্তি।
এখন ১৯ বছর পর যখন ‘হেরা ফেরি থ্রি’ তৈরি হচ্ছে, তখনই খবর আসে- বাবু ভাইয়া থাকছেন না! শুটিং শুরু হলেও নির্মাতারা আনুষ্ঠানিকভাবে কিছুই জানাননি। কিন্তু শোনা যাচ্ছে, সিনেমা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার কারণে অভিনেতা ও সহ-প্রযোজক অক্ষয় কুমার ২৫ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ দাবি করে পরেশ রাওয়ালের বিরুদ্ধে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন।
এই পরিস্থিতিতে মুখ খুলেছেন আরেক কেন্দ্রীয় চরিত্র শ্যাম-এর ভূমিকায় অভিনয় করা সুনীল শেঠি। তিনি এক সাক্ষাৎকারে স্পষ্ট বলেন, “হেরা ফেরি পরেশজি ছাড়া কল্পনাই করা যায় না। আমি বা অক্ষয় না থাকলে এক শতাংশ চলতে পারে, কিন্তু বাবু ভাইয়া ছাড়া? একশ শতাংশ অসম্ভব।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের ত্রয়ীর বন্ধন গড়ে উঠেছিল বাবুরাওয়ের হাত ধরেই। তিনিই তো রাজু-শ্যামকে একসাথে ভাড়া করেছিলেন। সে জায়গা থেকে আজ পর্যন্ত এই চরিত্রগুলোর শক্তি এসেছে। বাবুরাও ছাড়া রাজু-শ্যামের রসায়নই নিস্তেজ হয়ে যাবে।”
সুনীল জানান, তিনি তখন ‘কেরি বীর’ সিনেমার প্রচারে ব্যস্ত। হঠাৎ করেই আথিয়া ও আহান একসঙ্গে খবরটি পাঠায় তাকে। “ওরা জিজ্ঞেস করল- ‘বাবা, এটা কি সত্যি?’ আমি হতভম্ব হয়ে গেলাম,” বলেন সুনীল।
পরেশ রাওয়ালের এই সিদ্ধান্তে ব্যক্তিগতভাবে খুবই ব্যথিত তিনি। কারণ, বর্তমানে ‘ওয়েলকাম টু দ্য জঙ্গল’ সিনেমায় তিনি পরেশ ও অক্ষয়ের সঙ্গেই কাজ করছেন। এই পরিস্থিতি তাকে আরও বেশি ভাবিয়ে তুলেছে।
সুনীল শেঠি জানিয়েছেন, তিনি নিজে থেকে পরেশ রাওয়ালের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন পুরো ঘটনা জানার জন্য। তাঁর বিশ্বাস, মতপার্থক্যের বরফ গলবে। একই সঙ্গে তিনি পরিচালক প্রিয়দর্শনের বক্তব্যের সঙ্গেও একমত যে, এই সংকটের একমাত্র সমাধান হচ্ছে- বাবু ভাইয়ার প্রত্যাবর্তন।
এদিকে ভক্ত-অনুরাগীদের চাওয়া একটাই- যেকোনো মূল্যে ফিরে আসুক সেই পুরনো ত্রয়ী: রাজু, শ্যাম আর বাবু ভাইয়া। কারণ ‘হেরা ফেরি’ মানে শুধু হাসির সিনেমা নয়- এটা নস্টালজিয়ার একটা আবেগঘন অধ্যায়, যার প্রাণ ছিলেন এবং আছেন পরেশ রাওয়াল।
তবে এখন প্রশ্ন একটাই- যদি তিনি না ফেরেন, তাহলে কে হবেন বাবু ভাইয়া? আর আদৌ কি সম্ভব, কেউ সেই ছায়ামূর্তিকে ছুঁয়ে দেখানো?
ফিল্মি দুনিয়া আর ভক্তদের চোখ এখন নির্মাতাদের দিকেই- ফিরে আসবে কি সেই পুরনো ‘হেরা ফেরি’-র জাদু?
বাংলাধারা/এসআর