ঢাকা, সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫, ২৩ আষাঢ় ১৪৩২

গাজাবাসীর জন্য বিশেষ ভিসা চালুর আহ্বান ব্রিটিশ এমপিদের, স্টারমারের কাছে চিঠি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

 প্রকাশিত: জুলাই ০১, ২০২৫, ১২:০৬ রাত  

ছবি: সংগৃহিত

গাজার যুদ্ধবিধ্বস্ত মানুষদের যুক্তরাজ্যে পরিবারের সঙ্গে মিলিত হওয়ার সুযোগ দিতে বিশেষ ভিসা চালুর আহ্বান জানিয়েছেন ব্রিটিশ সংসদ সদস্য ও লর্ডরা। ইউক্রেনের মতো ‘গাজা ফ্যামিলি স্কিম’ চালুর দাবি তুলে তারা প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন।

সোমবার (৩০ জুন) স্কাই নিউজের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্রিটিশ পার্লামেন্টের ৬৭ জন এমপি ও লর্ড ‘গাজা ফ্যামিলি স্কিম’ চালুর জন্য স্টারমারের কাছে একযোগে আবেদন করেছেন। এই স্কিমের আওতায় ফিলিস্তিনিরা যুক্তরাজ্যে তাদের স্বজনদের সঙ্গে পুনর্মিলিত হতে পারবেন। পাশাপাশি গাজা উপত্যকা নিরাপদ না হওয়া পর্যন্ত যুক্তরাজ্যে থাকার সুযোগ পাবেন।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, “যেভাবে ইউক্রেন ও হংকংয়ের নির্যাতিত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছিল যুক্তরাজ্য, তেমন উদারতা এবার ফিলিস্তিনিদের প্রতিও দেখাতে হবে।”

২০২২ সালে রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের পর যুক্তরাজ্য সরকার ‘ইউক্রেন ফ্যামিলি স্কিম’ চালু করেছিল। ওই স্কিমের মাধ্যমে ইউক্রেনীয়রা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাজ্যে তিন বছর পর্যন্ত থাকার, পড়াশোনা ও কাজের সুযোগ পেয়েছিলেন। এমপিরা বলছেন, গাজার ক্ষেত্রেও তেমন ব্যবস্থা জরুরি হয়ে উঠেছে।

চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন লেবার পার্টির ৩৫ জন এমপি ও লর্ড, গ্রিন পার্টির চার এমপি, লিবারেল ডেমোক্র্যাটদের টিম ফ্যারন ও লায়লা মোরান, স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টির এমপিরা এবং উত্তর আয়ারল্যান্ডের কয়েকজন এমপি। সাবেক লেবার নেতা জেরেমি করবিন ও জন ম্যাকডনেলও স্বাক্ষর করেছেন এই চিঠিতে। এছাড়া কনজারভেটিভ পার্টির পক্ষে ব্যারোনেস হেলিক স্বাক্ষর করেছেন।

চিঠিতে গাজার মানবিক বিপর্যয়ের চিত্র তুলে ধরে বলা হয়েছে, “গাজায় মানবিক পরিস্থিতি দিন দিন ভয়াবহ হচ্ছে। ইসরায়েল অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করছে, ক্ষুধাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে এবং ত্রাণ সংগ্রহ করতে যাওয়া মানুষদের ওপর হামলা চালাচ্ছে।”

লেবার এমপি মার্শা ডি করডোভা, যিনি চিঠির অন্যতম উদ্যোক্তা, স্কাই নিউজকে বলেন, “যেভাবে ইউক্রেনের জন্য পারিবারিক ভিসা স্কিম চালু হয়েছিল, গাজার ক্ষেত্রেও এমন একটি স্কিম চালু করা উচিত। এটি প্রমাণ করবে, ব্রিটিশ সরকার যুদ্ধবিধ্বস্ত পরিবারগুলোর পাশে আছে।”

চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৫৩ হাজার ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। যদিও প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে।

গাজা থেকে অনেকেই যুক্তরাজ্যে যেতে চাইলেও ভিসা আবেদন করতে গিয়ে সমস্যায় পড়ছেন। কারণ, গাজার ভিসা আবেদন কেন্দ্র ধ্বংস হয়ে গেছে। রাফা সীমান্তও বন্ধ রয়েছে। ফলে বহু ফিলিস্তিনি মিশরে গিয়ে আটকে পড়েছেন। অথচ সেখানেও তাদের শিক্ষা বা চিকিৎসার পর্যাপ্ত সুযোগ নেই।

এখন দেখা যাচ্ছে, এমপিদের এই চিঠি কতটা গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার।

 

বাংলাধারা/এসআর