ইসি পুনর্গঠন ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবিতে আগারগাঁওয়ে এনসিপির বিক্ষোভ বুধবার
প্রকাশিত: মে ২০, ২০২৫, ১১:০১ রাত

ছবি: সংগৃহিত
বর্তমান নির্বাচন কমিশনের পক্ষপাতমূলক আচরণ ও গঠনতান্ত্রিক ত্রুটির অভিযোগ তুলে কমিশন পুনর্গঠনের দাবি জানিয়েছে ন্যাশনাল কনসেনসাস পার্টি (এনসিপি)। একইসঙ্গে স্থানীয় সরকার নির্বাচন অনতিবিলম্বে আয়োজনের দাবিতে বুধবার (২১ মে) সকাল ১১টায় আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে সংগঠনটি।
মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর বাংলা মোটরের রূপায়ন ট্রেড সেন্টারে দলের অস্থায়ী কার্যালয়ে আয়োজিত এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ও সদস্যসচিব আখতার হোসেন এসব কথা জানান।
নাহিদ ইসলাম বলেন, "বর্তমান নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়েছে একটি ফ্যাসিবাদী আইনের অধীনে। তারা যে আচরণ করছে, তা নিরপেক্ষতার পুরো বিপরীত। আমাদের প্রস্তাবিত নির্বাচন কমিশন সংস্কার প্রস্তাব তারা আমলে নেয়নি। ফলে তাদের ওপর আস্থা রাখা যায় না।"
তিনি আরও বলেন, "বর্তমানে যে সংকট তৈরি হয়েছে, তা স্থানীয় সরকার নির্বাচনের মাধ্যমেই সমাধান সম্ভব। আমরা অতীতের সকল নির্বাচনকে অবৈধ বলেছি, তাই সেগুলোর প্রার্থীদের আদালতের শরণাপন্ন হওয়া দ্বিচারিতা ছাড়া কিছু নয়। সরকার যদি প্রকৃতপক্ষে স্থিতিশীলতা চায়, তাহলে নিরপেক্ষ ও সংস্কারপ্রাপ্ত নির্বাচন কমিশনের অধীনে স্থানীয় সরকার নির্বাচন দিতে হবে।"
সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়, ৫ আগস্টের পর থেকে দেশের রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে পরিকল্পিতভাবে ‘নির্বাচন’কে সামনে আনা হয়েছে। এনসিপির দাবি, তারা কখনোই নির্বাচনের বিরোধিতা করেনি। বরং তারা চায়, প্রধান উপদেষ্টার নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যেই নির্বাচন হোক- তবে সেটি যেন হয় স্বচ্ছতা ও বিচারিক সংস্কার নিশ্চিত করে।
সংগঠনের সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, "২০২০ সালের ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের অবৈধ নির্বাচন ঘিরেই আজকের জটিল রাজনৈতিক পরিস্থিতির জন্ম। ইশরাক হোসেন বনাম শেখ ফজলে নূর তাপস মামলায় বিবাদী হয়েও নির্বাচন কমিশন কোনো ভূমিকা নেয়নি। এমনকি উচ্চ আদালতেও আপিল না করে মামলার বাদী পক্ষকে সুবিধা দেওয়া হয়েছে- যা কমিশনের পক্ষপাতের প্রমাণ বহন করে।"
তিনি আরও জানান, মামলার রায় ঘোষণার আগেই ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে প্রশাসক নিয়োগের ঘটনা পুরো আইনি প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। এর পরও গেজেট প্রকাশে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামতের আগেই রাতের আঁধারে গেজেট প্রকাশ কমিশনের পক্ষপাতপূর্ণ অবস্থানকে স্পষ্ট করে।
আখতার হোসেন বলেন, "বর্তমানে দেশের বিভিন্ন স্থানে আদালতে প্রার্থিতা নিয়ে যে জটিলতা তৈরি হয়েছে, তার মূলেই রয়েছে এই নির্বাচন কমিশনের পক্ষপাতদুষ্টতা। আমরা মনে করি, এ সংকট নিরসনের একমাত্র পথ হচ্ছে স্থানীয় সরকার নির্বাচন। তবে এই নির্বাচন পরিচালনার জন্য বর্তমান কমিশনের যে সক্ষমতা দরকার, তা তাদের নেই।"
তিনি অভিযোগ করে বলেন, "এই কমিশন সেইসব মানবতাবিরোধী ও পলাতক ব্যক্তিদের নির্বাচন করতে না দেওয়ার প্রস্তাবও প্রত্যাখ্যান করেছে, যারা গণবিরোধী শাসনামলে নির্বাচন কমিশন সংস্কার কমিশনের বিরুদ্ধেই অবস্থান নিয়েছিল। তাই এই কমিশনের ওপর দেশের জনগণের কোনো আস্থা নেই।"
সবশেষে আখতার হোসেন জানান, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন এবং স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজনের দাবিতে বুধবার সকাল ১১টায় নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ের সামনে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ সমাবেশ করবে এনসিপি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব, সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব ডা. তাসনীম জারা প্রমুখ।
বাংলাধারা/এসআর