ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫, ১৬ শ্রাবণ ১৪৩২

সরকারি চাকরিতে ‘জুলাই যোদ্ধাদের’ জন্য কোটা থাকছে না: মুক্তিযুদ্ধ উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক

 প্রকাশিত: জুলাই ২১, ২০২৫, ০১:২৫ দুপুর  

ছবি: সংগৃহিত

‘জুলাই যোদ্ধাদের’ জন্য সরকারি চাকরিতে কোনো কোটা থাকছে না বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই আজম, বীর প্রতীক। তিনি জানান, পুনর্বাসনের আওতায় নানা সহায়তা দেওয়া হলেও চাকরির কোটা প্রণয়নের কোনো পরিকল্পনা সরকারের নেই।

সোমবার (২১ জুলাই) সচিবালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।

উপদেষ্টা বলেন, “আমাদের মন্ত্রণালয় থেকে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহিদ পরিবার ও আহতদের পুনর্বাসনের জন্য একটি কর্মসূচি নির্ধারণ করা হয়েছে। সেখানে ফ্ল্যাট বরাদ্দ বা চাকরির কোটা অন্তর্ভুক্ত নেই। তবে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আত্মকর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে তারা যেভাবে জীবিকা নির্বাহ করতে চান, সেভাবে সরকার প্রয়োজনীয় সহায়তা দেবে যেমন হাঁস-মুরগি পালন, পশু বা মৎস্য চাষ ইত্যাদি।”

তিনি আরও বলেন, “জুলাই যোদ্ধাদের সরকার অনুদান দেবে, এটা স্বাভাবিক। তারা আত্মত্যাগ করেছেন। বর্তমানে তারা ২০ হাজার টাকা করে ভাতা পাচ্ছেন, যেটা মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতার সমান হলেও তাদের মর্যাদায় তুলনা করা ঠিক নয়। মুক্তিযোদ্ধারা মহান, তাদের অবদান অনন্য এবং অনস্বীকার্য। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রসঙ্গ এখানে আনা অনুচিত।”

চাকরিতে কোটা থাকবে কি না এমন প্রশ্নে তিনি সোজাসাপ্টা জবাব দেন, “না, কোনো কোটা থাকবে না। তারা যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরি পাবেন।”

উপদেষ্টা বলেন, “স্বৈরশাসন ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে এবং ৮ আগস্ট বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়। এই আন্দোলন সরকারিভাবে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান’ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।”

এই আন্দোলনের শহিদ ও আহতদের কল্যাণে সরকার বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। ১২ ডিসেম্বর প্রশাসনিক দায়িত্ব মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওপর ন্যস্ত করা হয়। পরে, ২৮ এপ্রিল গঠন করা হয় ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান অধিদপ্তর’, যা ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহিদ পরিবার ও জুলাই যোদ্ধাদের কল্যাণ ও পুনর্বাসন অধ্যাদেশ, ২০২৫’ অনুযায়ী পরিচালিত হচ্ছে।

স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত ৮৪৪ জন শহিদকে গেজেট আকারে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে শ্রেণিভিত্তিক গেজেটও প্রকাশ করা হয়েছে—‘ক’ শ্রেণিতে ৪৯৩ জন, ‘খ’ শ্রেণিতে ৯০৮ জন এবং ‘গ’ শ্রেণিতে ১,৬৪২ জন।

সম্প্রতি আরও ১,৭৬৯ জন আহতের তালিকা স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ থেকে পাওয়া গেছে, যাদের যাচাই-বাছাই শেষে গেজেট প্রকাশ করা হবে বলে জানান উপদেষ্টা।

তিনি বলেন, “জুলাই যোদ্ধাদের পুনর্বাসনে সরকার আন্তরিক। তবে এ পুনর্বাসনের মাধ্যম হবে আত্মনির্ভরশীলতা, কোটানির্ভর নয়।”

বাংলাধারা/এসআর