ঢাকা, শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ২ কার্তিক ১৪৩২

পাকিস্তানকে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান বাংলাদেশের

নিজস্ব প্রতিবেদক

 প্রকাশিত: আগস্ট ২৪, ২০২৫, ১০:৫৮ রাত  

ছবি: সংগৃহিত

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধকালে সংঘটিত গণহত্যার জন্য পাকিস্তানকে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চাইতে আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ। পাশাপাশি, দুই দেশের সম্পর্ক এগিয়ে নিতে দীর্ঘদিনের অমীমাংসিত ঐতিহাসিক বিষয়গুলো দ্রুত সমাধানেরও আহ্বান জানানো হয়েছে।

রোববার (২৪ আগস্ট) ঢাকার একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন ও সফররত পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার অংশ নেন। বৈঠক শেষে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানায়।

বৈঠকে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন পারস্পরিক শ্রদ্ধা, বোঝাপড়া এবং অভিন্ন স্বার্থের ভিত্তিতে সহযোগিতামূলক দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক গভীর করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি উল্লেখ করেন, অমীমাংসিত ঐতিহাসিক বিষয়গুলোর নিষ্পত্তিই টেকসই সম্পর্কের ভিত্তি গড়তে পারে।

দুই দেশের প্রতিনিধিরা বাণিজ্য, বিনিয়োগ, কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, জ্বালানি, যোগাযোগ, সংস্কৃতি, পর্যটন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনাসহ সম্ভাবনাময় খাতগুলোতে সহযোগিতা জোরদারের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। পাশাপাশি, নিয়মিত কূটনৈতিক ও খাতভিত্তিক যোগাযোগ বজায় রাখার গুরুত্বও স্বীকার করেন।

ভিসা প্রক্রিয়া সহজীকরণ, সমুদ্রপথে সংযোগ উন্নয়ন এবং বিমান যোগাযোগ পুনরায় চালুর ক্ষেত্রে অগ্রগতির কথা উল্লেখ করে উভয়পক্ষ সন্তোষ প্রকাশ করে।

বাংলাদেশ বিশেষভাবে ১৯৭১ সালের গণহত্যার আনুষ্ঠানিক ক্ষমা প্রার্থনা, যুদ্ধকালীন সম্পদের ন্যায্য বণ্টন, ১৯৭০ সালের ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য প্রাপ্ত আন্তর্জাতিক সহায়তা হস্তান্তর, এবং আটকে থাকা পাকিস্তানি নাগরিকদের প্রত্যাবাসনের মতো বিষয়গুলো দ্রুত সমাধানের আহ্বান জানায়।

অন্যদিকে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার জানান, আগামী পাঁচ বছরে পাকিস্তানে উচ্চশিক্ষার জন্য বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের ৫০০টি বৃত্তি দেওয়ার পরিকল্পনা চলছে, যার এক-চতুর্থাংশ চিকিৎসাশাস্ত্রে বরাদ্দ থাকবে। এছাড়া, জুলাই মাসের বিদ্রোহে আহত শিক্ষার্থী ও সাধারণ নাগরিকদের জন্য উন্নত চিকিৎসা ও অঙ্গ প্রতিস্থাপন সেবার প্রস্তাবও তিনি দেন। পাকিস্তান বাংলাদেশি হকি দলকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে।

উভয়পক্ষ আশা প্রকাশ করে যে, শক্তিশালী দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক দক্ষিণ এশিয়া ও এর বাইরেও শান্তি, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধি বৃদ্ধিতে ইতিবাচক অবদান রাখবে।

এ ছাড়া, রোহিঙ্গাদের দ্রুত, নিরাপদ, স্বেচ্ছায় এবং মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে পাকিস্তানের অব্যাহত সহযোগিতা কামনা করেছে বাংলাদেশ।

বাংলাধারা/এসআর